স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হতে পারে। আর সেই পরিবর্তন করতে হলে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে কোনোভাবেই ক্ষমতায় যাবার সুযোগ নেই।’
আজ শনিবার বিকালে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মার দুর্গম চরে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। বিদেশিরাও দুই-এক দিনের মধ্যে টের পেয়ে যাবেন জনগণ থেকে তারা (বিএনপি) দূরে সরে গেছে।’
‘কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। এদেশের জনগণ এদের চিহ্নিত করে ফেলেছে। তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মানুষ বুঝতে পেরেছে আগে কেমন ছিলেন এখন কেমন আছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই নির্বাচন কমিশন আমাদের একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে।’
প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সারা বাংলাদেশের খবর জানি, তারা (জনগণ) আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চায় না। তাদের একটাই কথা, যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকবে ততদিন দেশ আলোকিত থাকবে।’
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহিউদ্দিন, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী, শিবালয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মানিকগঞ্জের হবিরামপুরের ১৩ অক্টবরের যুদ্ধ অন্যতম। জেলার হরিরামপুরের লেছড়াগঞ্জ বাজারের পাশে হরিনা ক্যাম্প ছিল পাকসেনাদের সবচেয়ে রড় ক্যাম্প (বর্তমানে এটি হরিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়)। এই ক্যাম্পেই পাকিস্তানিদের ১০০ সদস্য ছিল। এর মধ্যে ৬০ জন নিয়মিত বাহিনীর সদস্য, বাকি ৪০ জন ছিল ইপিআর ও রাজাকার। এই যুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর ৬০ জন নিহত হয়। দুঃসাহসিক অপারেশনের শেষের দিকে হরিনা ক্যাম্পের ওয়্যারলেছ অফিসে আগুন লাগানোর সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান অগ্নিদগ্ধ হন। পরবর্তীতে তিনি শহীদ হন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের চাচাতো ভাই। মূলত এই অপারেশনের মাধ্যমে হরিরামপুর এলাকায় পাকিস্তানিদের আধিপত্যের চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি ঘটে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি অম্লান করে রাখতে ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। হরিরামপুর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের হরিনা ক্যাম্প (হরিরামপুর সিও অফিস) ও সুতালড়ি লঞ্চ আক্রমণের ওপর নির্মিত ম্যুরাল উদ্বোধন আজ বিকালে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ