নিজের জীবন দিয়ে ভারতের ডাক্তারদের লড়াইকে এক ধাক্কায় অনেকদূর এগিয়ে দিলো এগারো বছরের আব্দুর রহমান।
সম্প্রতি এক দুর্ঘটনায় ১১ বছরের ওই কিশোরের মৃত্যু ও তার পরবর্তী ঘটনা তামিলনাড়ুকে ভাবতে বাধ্য করছে।
গরিব দিনমজুর পরিবারের সন্তান আব্দুর রহমান স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। তিল তিল করে জমানো টাকায় তাকে একটা সাইকেল কিনে দিয়েছিলেন বাবা-মা। সেই সাইকেল থেকে পড়েই মাথায় গুরুতর ব্যাথা পায় সে। ধারদেনা করে ছেলেকে চেন্নাইয়ের বড় হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু ডাক্তাররা জানান, ততক্ষণে রোগীর ব্রেন ডেথ হয়ে গেছে।
আব্দুলের বাবা-মা সেই চরম শোকের মুহূর্তেই এমন একটি কাজ করেছেন, তার থেকে তৈরি হয়েছে ইতিহাস। ছেলের পরিণতি শোনামাত্র তারা সিদ্ধান্ত নেন, তার দেহের অঙ্গগুলি দান করবেন। হাসপাতালের পক্ষ থেকে যখন লিখিত সম্মতি নেওয়ার জন্য ফর্ম বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন আব্দুলের বাবা, নিরক্ষর আনসার রহমান আঙুলের টিপ ছাপ দিয়েছেন। হতদরিদ্র, নিরক্ষর পরিবারের এই সিদ্ধান্ত স্তম্ভিত করেছে তামিলনাড়ুবাসীকে। ঘটনাটা জায়গা করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত নথিতেও।
চেন্নাই অ্যাপোলো হাসপাতালের সেন্টার ফর লিভার ডিজিজ অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টেশন-এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর আনন্দ কক্কর জানান, 'ব্রেন ডেথ-এর অর্থ যে মৃত্যু, সেটা মানুষকে বোঝানো কষ্টকর ছিল। আমরা সেই কাজটা অনেকটাই করতে পেরেছি।' একই কথা বলেন, তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যসচিব জে রাধাকৃষ্ণনও। তাঁর কথায়, 'ডাক্তাররা এককাট্টা হয়ে লড়ছেন। আমরা চাই ১০০ শতাংশ অঙ্গ প্রতিস্থাপনই ব্রেন ডেথের পরে মৃতদেহ থেকে সংগ্রহ করা অঙ্গের মাধ্যমে হোক।'
বিডি-প্রতিদিন/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন