৩০০ বছর ধরে শাসনের পরে তাদের সাম্রাজ্যের পতন হলে ভারতজুড়ে আত্মগোপন করে‚ ছত্রখান হয়ে যায় মুঘল বংশ। শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর সিংহাসনে বসেছিলেন ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশদের হাতে অস্ত যায় সিপাহি বিদ্রোহ। সিংহাসনচ্যুত মুঘল সম্রাটের জায়্গা হয় দিল্লির জাফর মহল।
তখনও ব্রিটিশরা সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেনি কী করবে তাকে নিয়ে। শেষে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয় রেঙ্গুনে। শেষ মুঘল সম্রাটের সঙ্গে ছিলেন তার এক স্ত্রী জিনাত মহল এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্য। সেখানে পাঁচ বছর কাটাবার পরে ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর‚ ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে। স্ত্রী জিনাতের মৃত্যু হয় ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে। রেঙ্গুনে ১৯৯১ সালে এক নির্মাণকাজের সময়ে আবিষ্কৃত হয় তাঁদের সমাধি। সঙ্গে তাদের এক নাতনির সমাধিও।
যাই হোক‚ শেষ মুঘল সম্রাট তো চলে গেলেন নির্বাসনে। ভারতবর্ষে ছাড়িয়ে পড়ল তাঁর উত্তরসূরীরা। শোনা যায়‚ কলকাতায় চলে গেছিলেন প্রায় ৭০ জন মুঘল বংশীয় উত্তরসূরী। সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে যাঁকে নিয়ে সবথেকে বেশি চর্চা হয়েছে তিনি হলেন সুলতানা বেগম।
সুলতানার দাবি‚ তিনি মুঘল বেগম। শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের নাতির পুত্রবধূ। অর্থাৎ সুলতানার শ্বশুরমশাইয়ের ঠাকুরদা ছিলেন নির্বাসিত শেষ মুঘল সম্রাট। প্রমাণ হিসেবে রয়েছে কিছু পারিবারিক নথি ও ছবি।
সেসব এখন শুধু ইতিহাস নয়‚ বলা ভাল এই পরিবারের কাছে প্রাগৈতিহাসিক। মুঘল উত্তরসূরী সুলতানার বাস এখন হাওড়ার এক বস্তিতে। পাঁচ মেয়ের মধ্যে একজনের এখনও বিয়ে হয়নি। আছে এক ছেলে ও তাঁর পরিবার।
সুলতানার স্বামী প্রিন্স মির্জা বিদার বখত প্রয়াত হন ১৯৮০ সালে। তারপর থেকে আরও তীব্র হয়েছে অনটন। চায়ের দোকান চালিয়ে সংসারের ডালভাত জোগাড় করতেন সুলতানা। সে দোকান উঠে গেছে। এখন দর্জির কাজ করে মহিলাদের পোশাক বানিয়ে কোনওমতে চলে সংসার।