রাজপুত কন্যা যোধার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের অন্যতম সম্রাট জালালউদ্দিন আকবর। রাজপুতদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্যই রাজপুত কন্যাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। স্কুল পড়ুয়ারা পাঠ্য বইয়ে এই ইতিহাসই পড়ে আসছে। কিন্তু ভারতের গোয়ার এক লেখকের দাবিতে পুরো ইতিহাসই এখন প্রশ্নের মুখে। তিনি বলছেন, রাজপুত নয়, যোধাবাঈ আসলে ছিলেন এক পর্তুগিজ নারী।
শুনে চমকে উঠতেই পারেন। কিন্তু লুই দে আসিস কোরিয়া তাঁর বইয়ে গোটা বিষয়টির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। পানাজিতে মুক্তি পেয়েছে তার ১৭৩ পাতার বই ‘পর্তুগিজ ইন্ডিয়া অ্যান্ড মুঘল রিলেশনস ১৫১০-১৭৩৫।’
সে বইতেই তিনি লিখেছেন, যোধাবাঈ রাজপুত কন্যা ছিলেন না। ইতিহাস এর ভুল ব্যাখ্যা দেয়। ইতিহাস যাকে যোধাবাঈ বলে চিহ্নিত করে তিনি আসলে ডোনা মারিয়া মাসকারেনাস। ১৫০০ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ঘটনা। পর্তুগিজ জাহাজে চেপে আরব সাগর অতিক্রম করছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বোন জুলিয়ানা। সেই সময় তাদের বন্দি বানিয়ে আকবরের দরবারে পুরস্কার হিসেবে হাজির করেছিলেন সুলতান বাহাদুর শাহ। আকবরের বয়স তখন ১৮। বিয়েও হয়ে গেছে। কিন্তু ১৭ বছরের ডোনা মারিয়াকে দারুণ পছন্দ হয়েছিল তার। তাই দু’জনকেই নিজের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন মুঘল সম্রাট।
লেখক জানাচ্ছেন, পর্তুগিজ তথা ক্যাথোলিক ধর্মাবলম্বীরা এই ইতিহাস কিছুতেই মেনে নিতে চায় না। পাশাপাশি মুসলিম সম্রাটের স্ত্রী একজন বিদেশি, এ সত্যও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল মুঘলরা। সেই কারণেই যোধাবাঈ নামক ‘গল্প’টিকে মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়।
লুইয়ের আরও দাবি, এই কারণেই জাহাঙ্গিরের মায়ের পরিচয় নিয়ে ধন্দ রয়ে গেছে। ইতিহাসে সেভাবে তার মায়ের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিশেষজ্ঞ শিরিন মুসভির বক্তব্য টেনে তিনি বলেন, ‘আকবরনামা’তে যোধাবাঈয়ের কোনও উল্লেখ নেই। লেখা আছে, ভামালের কন্যার সঙ্গে আকবরের বিয়ে হয়েছিল। তবে তার নাম যোধাবাঈ ছিল না। গোয়ার লেখকের এমন দাবিতে এখন রাজপুত রমণী যোধাবাঈয়ের অস্তিত্বই ঘোর সংকটে!
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন