অচেনা রাস্তায় বের হলেলে একমাত্র ভরসা গুগল ম্যাপের, কিন্ত গুগল ম্যাপ কি সব সময় সঠিক রাস্তাই দেখায়? নিজের বিচার বুদ্ধি সরিয়ে রেখে অন্ধের মত গুগলের ম্যাপের উপর ভরসা করে কাদায় আটকে পড়ল শতাধিক গাড়ি। আমেরিকার কলোরাডোয় এই ঘটনা ঘটেছে।
ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাওয়ার পথে পেনা বলিভিয়ার্ড নামক এক রাস্তায় একটি দুর্ঘটনা ঘটায় রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। বিমানবন্দরের দিকে যাওয়া গাড়িগুলো অবস্থা বেগতিক দেখে গুগল ম্যাপের দ্বারস্থ হন, ম্যাপে দেখানো শর্টকাট পথ ধরলে তা এক মেঠো পথে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। আরও কিছুটা এগোনোর পর পথটি দেখা যায় পুরো কাদায় ভর্তি। এগোতে গিয়ে একে একে প্রায় সব গাড়িই কাদায় আটকে পড়ে, যে কয়েকটি গাড়ি কাদায় আটকায়নি তাদেরও পিছনে ফিরে যাওয়ার কোনও উপায় নেই, কারণ পিছনে তখন গাড়ির লম্বা লাইন।
কোনি নামক এক নারী যিনি নিজেও ওই রাস্তায় আটকে পড়েছিলেন, তিনি বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ থাকায় আমি বাধ্য হয়ে গুগল ম্যাপের দ্বারস্থ হই, ম্যাপে দেখায় ৪৩ মিনিটের রাস্তা ২৩ মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যাবে শর্টকাট অনুসরণ করলে। বাকি গাড়ির মতো আমিও ওই মেঠো পথ ধরি। এটি যে কারও ব্যক্তিগত রাস্তা তা-ও গুগল ম্যাপে দেখানো হয়নি।’
গুগলকে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হলে জানানো হয়, ‘আমরা কোনও রাস্তা বা রুট নির্ণয় করার সময় বিভিন্ন বিষয় মাথায় রাখি, রাস্তার আকার থেকে শুরু করে রুটের সুবিধা—সবই খেয়াল রাখা হয়। এই ক্ষেত্রে রাস্তাটি কাদায় ভর্তি ছিল কারণ আগের দিন রাতেই বৃষ্টি হয়েছিল ওই অঞ্চলে। আবহাওয়ার উপর আমাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় আমরা সকল চালকদেরই স্থানীয় আইন মেনে চলতে এবং গাড়ি চালানোর সময় সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাই। আমাদের ম্যাপ অনুসরণ করার অর্থ এই নয় যে নিজের বিচার বুদ্ধিকে ত্যাগ করতে হবে। তবে এই ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’
বলে রাখা ভালো আজই গুগল ম্যাপ নিত্যযাত্রীদের সুবিধার্থে নতুন এক ফিচার আনছে যাতে কোনও রাস্তায় কিংবা বাসে ট্রেনে কতটা ভিড় থাকবে তা জানা যাবে। এক দিকে নতুন ফিচার অন্যদিকে এ রকম দুর্ঘটনা
সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হতেই পারেন।
গুগল ম্যাপের নির্দেশিত রাস্তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে আবারও। গুগল ম্যাপ নির্দেশিত রাস্তা অনুসরণ করে ভুল জায়গা অথবা বিপদে পড়তে হয়েছে আগেও। তবে এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দোষ গুগল ম্যাপকেও দেওয়া যায় না, গুগল ম্যাপ আসার আগেও মানুষ অচেনা রাস্তায় যেত, তখন তাকে নিজের বিচার বুদ্ধির উপর ভরসা ও স্থানীয়দের সাহায্যই নিতে হত। নিজের উপর আস্থা হারিয়ে অন্ধভাবে গুগল অনুসরণ করা যে উচিত নয়, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।
বিডি প্রতিদিন/২৮ জুন, ২০১৯/আরাফাত