জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আমার মনোনয়ন লাগবে। তিনি বলেন, দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে তা সহ্য করা হবে না। গতকাল জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেসিডিয়াম ও দলের সংসদ সদস্যদের যৌথসভায় এ কথা বলেন তিনি। বৈঠক সূত্র জানায়, এ সময় তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করতে দলের প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের সহযোগিতা চান এরশাদ। গতকাল বেলা ১১টার পর এ সভা শুরু হয়। জানা যায়, দীর্ঘদিন পর জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কারও কথা না শুনেই মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মাথায় তড়িঘড়ি করে এ বৈঠক শেষ করেন দলটির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। এ নিয়ে পার্টি চেয়ারম্যানের ওপর চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডিয়াম সদস্যরা। জাতীয় পার্টির ইতিহাসে এটিই স্বল্পসময়ের যৌথসভা। এরশাদ বলেন, সিটি নির্বাচনে আমরা তিনজন প্রার্থী দিয়েছি। ভোটের আর বেশি দিন নেই। এখন নির্বাচনের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। কারণ প্রার্থীরা ভোট না পেলে দলের মান-ইজ্জত কিছুই থাকবে না। এ সময় নেতাদের ওপর অভিমান করে এরশাদ বলেন, 'নির্বাচনে তোমাদের কাছে পাই না। সব কিছুই আমাকে একা করতে হয়। যে কয়দিন আছে নির্বাচনে আমাকে একটু সহযোগিতা করো।' বৈঠক শেষে মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেড় ঘণ্টা যানজট ঠেলে সভায় এসেছি, কথা বলতে চাইলাম। কিন্তু বলতে দেওয়া হলো না। তাহলে কেন এই সভা? চট্টগ্রামে জাতীয় পার্টি সমর্থিত সিটি মেয়র প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্টি চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়াই বলেছি, আমি আপনার দলের সমর্থিত প্রার্থী। কিন্তু মহাসচিব আমার পক্ষে না গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে আপনাকে ব্যবস্থা নিতে হবে। পার্টি চেয়ারম্যান এ পর্যায়ে তাকে থামিয়ে দেন। শেঠকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এসব পরে শুনব। এর পরই সভা শেষ করে দেন এরশাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মশিউর রহমান রাঙ্গা, এম এ হান্নান, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, এস এম ফয়সল চিশতী, গোলাম কিবরিয়া টিপু, আবুল কাসেম, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, সোলায়মান আলম শেঠ, সুনীল শুভ রায়, তাজ রহমান, নুরুল ইসলাম মিলন, মোহাম্মদ নোমান মিয়া, আলতাফ আলী, অ্যাডভোকেট মহসিন, হাফিজুর রহমান প্রমুখ। তবে রওশন এরশাদ, এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ, তাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন।