প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে দেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করার পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করছি। এ ব্যাপারে দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। কারণ কিছু ষড়যন্ত্র তো থাকবেই। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ যেভাবে দেশের গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুরক্ষিত করেছে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আমরা যেন সেইভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, দেশবাসীর সেবা করে যেতে পারি।
বৃহস্পতিবার সংসদে আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত আমরা করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সদ্য স্বাধীন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে জাতির পিতা গড়ে তুলেন। মাত্র ৯ মাসে জাতিকে একটি সংবিধান উপহার দেন। তিনি যখন তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরের সংগ্রামে ব্যস্ত তখনই ঘাতকরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে।’
তিনি বলেন, ‘৭৫-পরবর্তী সময়ে নানা চক্রান্ত এবং নির্যাতন আর নিপীড়নের মাধ্যমে জনগণের সংগঠন আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এ অপচেষ্টা কখনই সফল হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী সময় যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছিল তারা মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি। তারা কখনোই দেশের স্বাধীনতা চান না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। তখন দেশের মানুষ সুখের মুখ দেখতে থাকে। কিন্তু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কাছে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। আমাদের অপরাধ ছিল দেশের সম্পদ গ্যাস বিদেশি শক্তির হাতে তুলে না দেয়া, অথচ ওই সময় খালেদা জিয়া গ্যাস দেয়ার জন্য মুচলেকা দিয়েছিল। ওই সময় বেশি ভোট পেয়েও আসন কম পাওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘২০০১ সালের পর বিএনপি-জামায়াত জোট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অমানসিক নির্যাতন চালায়। ওই সময়ে দলের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করা হয়। তাদের অত্যাচার, নির্যাতন একাত্তরের গণহত্যাকেও হার মানায়।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে আবারও জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয়। এরপর সরকার গত সাড়ে ৭ বছরে দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রামীণ উন্নয়ন, পররাষ্ট্র নীতি ও কৌশলসহ প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.০৫ শতাংশ। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করার পর দেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে উন্নীত করেছিলেন। এরপর আর কোন সরকারের সময় আর এই প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়নি। বঙ্গবন্ধু গভীর সমুদ্র সীমা ও স্থলসীমানা আইন করে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত হতো।’
বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ জুন ১৬/ সালাহ উদ্দীন