পাহাড়ে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল। নানা বয়সের নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় পুরো রাজবন বিহার এলাকা। গতকাল সকাল ৯টায় শুরু হয় রাঙামাটি রাজবন বিহারের উত্তরের মাঠে প্রবারণা পূর্ণিমার বিশেষ প্রার্থনা। এ সময় সাধু সাধু সাধু ধ্বনিতে উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেন উপস্থিত পুণ্যার্থীরা। একই সঙ্গে দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে প্রার্থনা করেন তারা।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব হলো প্রবারণা পূর্ণিমা। তাই উৎসব পালনে কোনো কমতি রাখেনি রাঙামাটি রাজবন বিহারের উপাসক-উপাসিকা পরিষদ। একই সঙ্গে আয়োজন করা হয় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘ দান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান অনুষ্ঠান। তৈরি করা হয় হরেক রঙের ফানুস।
উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ধর্মীয় নির্দেশনা দেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ, রাঙামাটি পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান। শুধু রাঙামাটি রাজবন বিহারে নয়, রাঙামাটির ১০১টি বিহারে একসঙ্গে এ প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবের আয়োজন করা হয়। বিহারে বিহারে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান ও প্রাতরাশ, মঙ্গলসূত্র পাঠ, বুদ্ধপূজা, পঞ্চশিল প্রার্থনা, মহাসংঘ দান, প্রদীপ পূজা, বিভিন্ন দানানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী পালিত হয় এ প্রবারণা। অন্যদিকে এ উৎসবকে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে হিসেবে পালন করছে মারমা জনগোষ্ঠী। চাকমাদের কাছে এটি বাংলায় প্রবারণা পূর্ণিমা হিসেবে পরিচিত। শুধু রাঙামাটি নয়, এমন উৎসবে মেতে উঠেছে অপর পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানও। উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটি জেলা প্রশাক মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘দেশে শান্তি সম্প্রীতি রক্ষা করতে সব জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট থাকবে এ প্রবারণার মধ্য দিয়ে। রাঙামাটি পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন জানান, মাসব্যাপী চীবর দান অনুষ্ঠানে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।