বাজেট আলোনায় অংশ নিয়ে সরকারি ও বিরোধীদলের সদস্যরা বরেছেন, ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের কারণে বিদেশি বিনয়োগ কমে গেছে। প্রাইভেট সেক্টরেও বিনিয়োগ অস্বাভাবিকভাবে কম হচ্ছে। আর এই বিনিয়োগের মূল অন্তরায় হলো অবকাঠামো গ্যাস, বিদ্যুত্সহ আইনশৃংখলা পরিস্থিতি। বাংলাদেশে সন্ত্রাস, নাশকতা করার ফলে দেশে বিনিয়োগ আসা কমে যায়। দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে টার্গেট কিলিং করা হচ্ছে। যদি এসব নাশকতা না থাকে তাহলে আগামীতে আরও বিনিয়োগ বাড়বে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে আজ সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এমপিরা এসব কথা বলেন।
আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির এমপি ও সরকারের পানি সম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সাবেক খাদ্য মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক শ্রমমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, শেখ ফজলে নূর তাপস, বি এম মোজাম্মেল হক, মো. গোরাম রব্বানী, সাইমুম সরওয়ার কামল, মৃনাল কান্তি দাস, মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, স্বপন ভট্টাচার্য্য, আনোয়ারুল আবেদীন খান ও জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর ও মাহজাবীন মোর্শেদ।
সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ অস্বাভাবিকভাবে কম হচ্ছে। আর এই বিনিয়োগের মূল অন্তরায় হলো অবকাঠামো গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য বিষয়। কিন্তু তার সাথে সাথে দরকার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি। বাংলাদেশে সন্ত্রাস-নাশকতা করার ফলে দেশে বিনিয়োগ আসা কমে যায়। বেগম খালেদা জিয়া ২০১৪ সালে একটানা তিন মাস একটানা হরতাল-অবরোধ, আগুন সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা করেছে। গত অর্থবছর তেমন কোনো হরতাল-নাশকতা সন্ত্রাস ছিল না বলে, গতকাল একটি বিদেশি একটি সংস্থা বলেছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ সর্বোচ্চ ২.২৩ বিলিয়ন ডলার। শুধু ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ অনেক বাড়ছে। যদি নাশকতা না থাকে তাহলে আগামীতে আরও বিনিয়োগ বাড়বে। এবং সপ্তম বার্ষিক পরিকল্পনা ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আছে সেটাও অর্জন হবে বলে মনে করেন তিনি।
পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের কারণে বিদেশি বিনয়োগ কমে গেছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং আমি মনে করি, এখন সময় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি ঐক্যে হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি।’
পানিসম্পদ মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গিবাদের স্থান নেই। এটা দেশের মানুষই প্রমাণ দিয়েছে। বর্তমান টার্গেট কিলিং করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটাও সাকসেসফুল হবে না। উনারা যখন দেখেছে জ্বালাও পোড়াও করে হয়নি। মানুষ পুড়িয়ে মেরে হয়নি। তখন এরা টার্গেট কিলিং গেছে। কিন্তু এদেশের মানুষ সেটা সহ্য করবে না।’
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘নির্বাচনের পর গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস করেও সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে খালেদা জিয়া। পরে বিদেশিদের হত্যা করে সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। তাও পারেনি। এখন তারা বলছে নির্বাচন দিলে নাকি গুপ্তহত্যা বন্ধ হবে। যদি হত্যাকারীদের সাথে তাদের আঁতাত না থাকে তাহলে একথা তারা কীভাবে বলছে। খালেদা জিয়া ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন।’
বিডি-প্রতিদিন/২৬ জুন ২০১৬/শরীফ