বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে বঙ্গোপসাগর পাড়ে দুবলারচরে আগামী শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের তিন দিনব্যাপী শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে দুবলার চরের আলোরকোলে বসছে রাস মেলা। সুন্দরবনে প্রবেশে বন বিভাগ ৮টি রুট নির্ধারণ করেছে। এসব রুট দিয়ে নৌকা, ট্রলার, লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযানযোগে পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা যাত্রা করতে পারবেন। তবে এবার এই উৎসবের সময় বন্যপ্রাণী বাঁচাতে তিনদিন সুন্দরবনে সব ধরণের পাস-পারমিট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বন বিভাগ। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম প্রেস বিফিং করে বলেন, প্রায় দুই শত বছরের পুরনো এই ঐতিহাসিক রাস উৎসবকে ঘিরে বঙ্গোপসাগর উপকূলে এবার সুন্দরবন বিভাগের ১৮টি টহল টিমের পাশাপাশি কোস্টগার্ড, র্যাব, নৌ বাহিনী ও পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এবার রাস মেলা উপলক্ষে তিনদিন সুন্দরবনে মাছ শিকারসহ সকল ধরনের পাশ পারমিট বন্ধ থাকবে। হরিণসহ বন্য প্রাণী শিকার রোধে ভ্রাম্যমান টিমকে শক্তিশালী করা হয়েছে। পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা কোন প্রকার মাংস, এমনকি ছাগল-মুরগীও সাথে নিয়ে সুন্দরবনে ঢুকতে পারবে না। এবারই প্রথম অন্য ধর্মের দর্শনার্থীদের রাস উৎসবে যোগ দিতে পর্যটকদের ন্যায় রাজস্ব প্রদান করতে হবে।
এবার সুন্দরবনের রাস উৎসবে যেতে ৮টি রুট নির্ধারন করাছে সুন্দরবন বিভাগ। এই ৮টি রুট হচ্ছে, ঢাংমারী স্টেশন হয়ে পশুর নদী দিয়ে দুবলারচর, বগি-বলেশ্বর হয়ে দুবলারচর, শরণখোলা স্টেশন হয়ে দুবলারচর, বুড়িগোয়ালিনী থেকে বাটুলানদী-বল নদী হয়ে দুবলারচর, কদমতলা থেকে ইছামতি নদী হয়ে দুবলারচর, কৈখালী স্টেশন হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া হয়ে দুবলারচর, কয়রা শিবসা হয়ে দুবলারচর ও নালিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী দিয়ে দুবলারচর।
সুন্দরবনের রাস উৎসবের আয়োজকরা জানান, প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের ভরা পূর্ণিমায় সাগর পাড়ের দুবলার চরে অনুষ্ঠিত হয় তিন দিনব্যাপী রাস উৎসব। এ উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান ও প্রতিবেশী দেশসহ দেশি-বিদেশি লক্ষাধিক দর্শনার্থী এবং তীর্থ যাত্রীর ঢল নামে সুন্দরবনের দুবলারচরে। এ সময় আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সাগর পাড় এলাকা। এবার তিথি অনুযায়ী ১২ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ১৪ নভেম্বর প্রত্যুষের জোয়ারে সাগরে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে এ মেলা শেষ হবে। মেলায় হস্ত ও কুটির শিল্পের কয়েকশ' দোকানী পসরা সাজিয়ে বসবে। এছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ