নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে নিহত দুজনের লাশ অদল বদল হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদের লাশ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান ন্যায় বিচারের স্বার্থে সিআরপিসির ২৫ ধারায় এই আদেশ দেন।
আদালত আদেশে বলেছে, আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে বলা হয়েছে, ফয়সালের লাশ হিসেবে তার পরিবারকে যে লাশ দেওয়া হয় তা ফয়সালের নয়। ওই লাশ একই দুর্ঘটনায় আরেক নিহত নাজিয়া আফরিন চৌধুরীর লাশ।
কীভাবে অদল-বদল হল মৃতদেহ?
বিমান দুর্ঘটনায় নিহত সাংবাদিক আহমেদ ফয়সালের মরদেহ দেশে আসার পর ঢাকায় আর্মি স্টেডিয়াম থেকে পরিবারের কাছে তা হস্তান্তর করা হয়। সেদিনই মরদেহ নিয়ে তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের ডামুড্যায় যান তার মামা কায়কোবাদ। পরদিন ২০ মার্চ সকালে মৃতদেহ কবর দেওয়ার সমস্ত আয়োজন চূড়ান্ত। কফিন থেকে তার শরীর কবরে নামানোর শেষ মুহূর্তে দেখা গেল সাদা কাপড়ে মোড়ানো মরদেহের ওপরে স্টিকারে লেখা "নাজিয়া আফরিন চৌধুরী" না। এরপর তারা বুঝতে পারেন যে এটা আহমেদ ফয়সালের লাশ নয়। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের সামনে অনাকাঙ্ক্ষিত, বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় সেই মুহূর্তে মৃতদেহ দাফন করা হয়। এর বাইরে আরও একটি বিষয়ে ফয়সালের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। তা হলো আহমেদ ফয়সাল লম্বা আকৃতির হলেও কফিনের ভেতর যে মৃতদেহ ছিল তা দেখে তেমন লম্বা মনে হয়নি।
লাশ বদল হওয়া নিয়ে করা আবেদনে নিহত আহমেদ ফয়সালের পরিবারের পক্ষে থাকা আইনজীবী আশরাফ উল আলম এসব কথা জানান। প্রমাণ হিসেবে ফয়সালের কফিনে পাওয়া নাজিয়া আফরিন চৌধুরী লেখা স্টিকারও এদিন আদালতে দেখানো হয় বলেও জানান তিনি।
আইনজীবী আশরাফ উল আলম আরও বলেন, লাশ দাফনের পর ফয়সালের পরিবারের সদস্যরা নাজিয়ায় পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। নাজিয়া আফরিন চৌধুরীর বাসা ঢাকায় সূত্রাপুরের টিপু সুলতান রোডে। তাকে দাফন করা হয়েছিল বনানী কবরস্থানে। যেহেতু ফয়সালের কফিনে নাজিয়ার নাম লেখা স্টিকার পাওয়া গেছে তাই তারাও বিষয়টিতে একমত হন এবং দুই পরিবার আদালতে আবেদন করেন।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার আদালত দুজনের মরদেহ কবর থেকে তুলে পরস্পরের কাছে হস্তান্তর ও যার যার কবরে নতুন করে কবর দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব