অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, চলমান বাজেটের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশে রফতানি আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়লেও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। বিগত অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় বর্তমানে মোট মূল্যস্ফীতি বেড়েছে দশমিক ৮ ভাগ। তবে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়লেও খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি গড়ে বিগত অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশ খানিকটা কমেছে।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের ২০তম অধিবেশনে আজকের বৈঠকে ২০১৭-১৮ বাজেটের দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন।
দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেটের অগ্রগতি প্রতিবেদন তুলে ধরতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করেছি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতিপত্র পেয়েছে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক এই অর্জন জাতি হিসেবে আমাদের সক্ষমতা, দৃঢ়তা, সহিঞ্চুতা ও গতিশীলতার স্বীকৃতি।
অর্থমন্ত্রী দৃঢ়কন্ঠে বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি এখন অনেক বেশি সুদৃঢ় হয়েছে। আত্মিক শক্তিতে অনেক বেশি বলীয়ান হয়েছি আমরা। আমার বিশ্বাস, দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবো আমরা। প্রমাণ করতে পারবো জাতির জনকের অমোঘ উচ্চারণের যথার্থতা; দেখাতে পারবো, বাঙালি জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে উন্নত দেশের কাতারে সামিল হওয়ার অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ইনশা-আল্লাহ।
সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে এনবিআরের কর আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট সরকারি ব্যয় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। রফতানি আয় বিগত অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষের ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার হতে বেড়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে দ্বিতীয় প্রান্তিকে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।
বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০১৬ সালর ডিসেম্বরে সাড়ে ৫ শতাংশ হতে বেড়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং বন্যাজনিত ফসলহানির কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে বেড়েছে। তবে প্রবাস আয় প্রবাহে প্রথম প্রান্তিকের চাঙ্গাভাব দ্বিতীয় প্রান্তিকেও বজায় ছিল।
তিনি বলেন, বিগত ৪৭ বছরে ৫টি দেশ বিভিন্ন সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের দেশের অবস্থান থেকে উত্তরণ করেছে। তবে, কোন দেশই বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের তিনটি সূচক অর্থাৎ মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে একই সঙ্গে প্রমাণ অর্জন করতে পারেনি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার