বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বাঘ, সিংহ, ভালুক এবং অজগর সাপকে খাওয়ানো হচ্ছে বেলজিয়ামের ফ্লেমিস জায়াণ্ট খরগোশ। বছরে ৮-১০ বার বাচ্চা ধারণ ও প্রসবের ক্ষমতাসম্পন্ন এ খরগোশ দেশের যেকোনো পার্কে এটাই প্রথম। এতে জীববৈচিত্রে দেখা দিয়েছে চরম হুমকি। তবে খোলা-মেলা পরিবেশের এসব হিংস্র প্রাণিকে আবদ্ধ অবস্থায় প্রাণবন্ত রাখতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ।
পার্কের প্রকল্প পরিচালক সামসুল আজম জানান, প্রতি শুক্রবার বাঘ, সিংহ, ভালুক এবং অজগর সাপকে খরগোশ খেতে দেয়া হয়। এজন্য ওইসব প্রাণীর জন্য ৩০-৪০টি (৭০-৮০ কেজি) খরগোশ দরকার হয়। বর্তমানে ঠিকাদারদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন খামার থেকে দেশীয় প্রজাতীর খরগোশ সরবরাহ করা হয়। নিজস্ব পরিবেশে লালন-পালন করে বেলজিয়াম খরগোশ সরবরাহ করা হলে প্রতিমাসে তিন-চার লাখ টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। তাই বেলজিয়াম থেকে ৩-৬ মাস বয়সী (৫-৮ কেজি ওজনের) ৬টি জায়াণ্ট খরগোশের বাচ্চা আনা হয়েছে।
প্রজননের ২৫-৩০ দিন পরই বাচ্চা দিতে সক্ষম এই খরগোশ বছরের ৮-১০ বার বাচ্চা দেয়। প্রতিবারে ৩-৫টি করে জন্ম নেয়া এই বাচ্চাগুলোর ওজন এক বছরের ব্যবধানে ১২-১৪ কেজি হয়। আবদ্ধ পরিবেশে এরা ৫-৬ বছর বাঁচে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে এরা আরও কম বাঁচে।
পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার মো. সরোয়ার হোসেন খান জানান, এরা শীতল পরিবেশের প্রাণী হলেও এই পার্কে বাঁচিয়ে রাখার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। অনুকুল পরিবেশে এরা ওজনে ও সংখ্যায় দ্রুত বাড়ে। এদের খাবার হিসেবে গাজর, মূলা, কঁচি ভুট্টা, বাদাম, ছোলা, বরবটি, নাশপাতি দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, প্রতি শুক্রবার এখানকার পূর্ণ বয়স্ক বাঘ, সিংহ, ভালুক ও অজগরকে ২ কেজি ওজনের জ্যান্ত খরগোশ খেতে দেয়া হয়। আর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বেলায় এক কেজি থেকে আধা কেজি ওজনের খরগোশ দেয়া হয়। অন্য পাঁচদিনের প্রতিদিন পূর্ণবয়স্ক প্রাণীদের ৫ কেজি গরুর মাংস দেয়া হয়। তবে সাদা সিংহকে দেয়া হয় ৬ কেজি করে। বর্তমানে পার্কে ৯টি বাঘ, ২৪টি সিংহ, ১৪টি ভালুক এবং ৯টি অজগর সাপ রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১৬ এপ্রিল ২০১৮/এনায়েত করিম