বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগে সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো লিভার প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
চিকিৎসকদের হিসাব মতে, একজনের শরীরে সফলভাবে লিভার প্রতিস্থাপনের খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা। সে অনুসারে বিএসএমএমইউতে লিভার প্রতিস্থাপনের আনুমানিক খরচ হবে ২০-২৫ লাখ টাকা।
সম্প্রতি সিরাতুল ইসলাম শুভ নামের ২০ বছর বয়সী তরুণের শরীরে তার মায়ের (৪৯) দান করা আংশিক লিভার প্রতিস্থাপন করা হয়।
এ বিষয়ে শনিবার বিএসএমএমইউতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এ সময় হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান বলেন, সিরাতুল ইসলাম শুভর মায়ের বয়স ৪৯ বছর। তিনি তার ছেলেকে আংশিক লিভার দিতে সম্মত হন। এরপর গত মাসের ১৫ জুন শুভকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৪ জুন মায়ের কাছ থেকে আংশিক লিভার নিয়ে শুভর লিভার ট্রান্সপ্লান্টের দিন ধার্য করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী লিভারগ্রহীতার লিভার সম্পূর্ণ ফেলে দিয়ে লিভারদাতার লিভারের ডান অংশ সফলভাবে প্রতিস্থাপিত করা হয়। এই অপারেশন সম্পন্ন করতে মোট ১৬ ঘণ্টা সময় লাগে এবং ২০ ব্যাগ রক্ত লাগে।
তিনি আরও বলেন, শনিবার অপারেশনের ১৪তম দিন। লিভারদাতা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। লিভারগ্রহীতাও বর্তমানে সুস্থ। তার ব্লাড প্রেসার এবং রেসপিরেশন (শ্বাস-প্রশ্বাস) নরমাল আছে। স্বাভাবিক আহার গ্রহণ করছেন। তার বায়োকেমিক্যাল কিছু অ্যাবনরমালিটি আছে। সেসবের চিকিৎসা চলছে। আর তার প্রতিস্থাপিত লিভারও কাজ শুরু করেছে, তবে পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করতে ৪-৬ সপ্তাহ সময় লাগে। তার আগে পূর্ণাঙ্গ সফল অপারেশন বলা যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত ফলাফল ভালো। রোগী অপারেশনের চতুর্থ দিনেই হাত-পা নাড়াতে পেরেছেন, সপ্তম দিনে বসে চা খেয়েছেন।
অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে তথা বিএসএমএমইউতে লিভার প্রতিস্থাপনের খরচ কম হবে উল্লেখ করে ডা. জুলফিকার রহমান খান বলেন, ভারতে এ চিকিৎসা করাতে প্রায় এক কোটি টাকা লাগে। সঙ্গে আনুষঙ্গিক আরও খরচ আছে। বিএসএমএমইউতে তার চেয়ে কম লাগছে, কারণ এখানে সার্জনদের আলাদা টাকা দিতে হচ্ছে না, লজিস্টিক সাপোর্ট দেশের মধ্য থেকেই পাওয়া যাচ্ছে বা দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে না। পাশাপাশি সরকারি সহযোগিতা আছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আক্তারুজ্জামানসহ চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত অন্য চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন