মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততার ক্ষতিকর প্রভাব সরাসরি নারী ও শিশুর জীবনকে আক্রান্ত করছে। লবণাক্ততা উপকূলীয় এলাকার মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। এতে তাদের জীবন অরক্ষিত হয়ে পড়ছে।
রবিবার ঢাকার ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনিস্টিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিজ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর বিশেষত নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের ইন্সেপশন নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালা।
কামরুন নাহার বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার। উন্নত দেশসমূহ প্রচুর পরিমাণে কার্বন নিঃস্বরণ করছে। এর ফলে প্রতিনিয়তই পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমরা নির্দোষ কিন্তু আবার আমরাই ভয়ঙ্কর ক্ষতির শিকার হচ্ছি। আমরা ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীন অবস্থার দিকে যাচ্ছি।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের চরম বিপন্নতার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে সচিব বলেন, বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ ভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে মাত্র ৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি আমাদের জন্য বড় ঝুঁকি। সরকার জলবায়ু পরিবর্তন থেকে সৃষ্ট ঝুঁকি মোকাবেলায় অগ্রাধিকার কর্মসূচি সমূহ হাতে নিয়েছে।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখ্যার্জী। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুন নেছা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এস এম মঞ্জুরুল হান্নান খান।
উল্লেখ্য, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর বিশেষত নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে ২৭৪ কোটি টাকার (জিওবি ৬৬ কোটি টাকা ও সবুজ তহবিল থেকে ২০৮ কোটি টাকা) প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পে কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে ইউএনডিপি, বাংলাদেশ।
খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৫টি উপজেলার ( কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, আশাশুনি ও শ্যামনগর) ৩৯টি ইউনিয়ন সাত লাখ মানুষ সুবিধা পাবে। প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবারের নারী সদস্যদের জলবায়ু সহিষ্ণু জীবিকার সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে অভিযোজন সক্ষমতা গড়ে তোলা ও ২ লাখ ৪৫ হাজার মানুষের জন্য লবণাক্ততামুক্ত ও দুর্যোগ সহনশীল পানি সরবারাহের ব্যবস্থা ও সুপেয় পানির নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া ৩৯টি ইউনিয়নে ১০১টি নারী স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন, প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তার মাধ্যমে নারী সংবেদনশীল সতর্কীকরণ ও দুর্যোগ প্রস্তুতি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন