রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা খুনিদের বিচার না করে পুরস্কৃত করেছে তাদেরও বিচার করার দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হলেও নেপথ্যের মূল মাস্টারমাইন্ডদের এখনও বিচার হয়নি, তারা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ডদের এখনও বিচারের আওতায় আনার সুযোগ রয়েছে। অনেক আমলা-বড় কর্মকর্তারা বক্তব্য শেষে জয় বাংলা বলতে ভয় পান। তাই আইন করে জয় বাংলা স্লোগানকে জাতীয় স্লোগানের স্বীকৃতি দিয়ে সবাইকে জয় বাংলা বলতে বাধ্য করতে হবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে আজ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা এসব দাবি জানান।
এসময় স্পিকারের আসনে থাকা ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, সংসদে একটি সর্বসম্মতি প্রস্তাব আসা উচিত, যাতে অন্তত জাতীয় সংসদের সকল সদস্যরা বক্তব্যে শেষে জয় বাংলা বলেন। আর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই কে জয় বাংলা বললো, কী বলবো না তাতে কিছু যায় আসে না।
আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সরকারি দলের সৈয়দা জাকিয়া নূর, মোহাম্মদ এবাদুল করিম, আয়েশা ফেরদৌস, নাদিরা ইয়াসমীম জলি এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার ও আহসান আদিলুর রহমান।
আবদুল মতিন খসরু বলেন, বাংলাদেশ আর দরিদ্র্য, ক্ষুধাপিড়ীত দেশ নয়, সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। বুয়েটে এক শিক্ষার্থীকে হত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতা এসব মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় কেন হচ্ছে- তা গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনেকের মান-অভিমান থাকতে পারে, কিন্তু বঙ্গমাতা ও শিশু রাসেলের কী অপরাধ ছিল? বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, আত্মস্বীকৃত কিছু খুনীর রায় কার্যকর হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের নেপথ্যের মূল নায়কদের এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে, বিচার হয়নি। খুনিদের বিচার না করে যারা (জিয়া ও খালেদা জিয়া) পুরস্কৃত করেছে তারাই মূল মাস্টারমাইন্ড। এদের বিচার করার এখনও সুযোগ রয়েছে।
রলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর একটি প্রজন্মকে মিথ্যা ইতিহাস জানানো হয়েছে। পাকিস্তান থেকে এক সময় যেসব কথা বলা হয়েছে, আজও বিএনপি-জামায়াত-রাজাকাররা একই কথা বলছে।
সাহারা খাতুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী, প্রাজ্ঞ ও জনকল্যাণকামী সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোলমডেল। দেশের এখন আর কাঁচা রাস্তা দেখা যায় না, প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে এখন বিদ্যুতের আলো জ্বলছে।
দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে সৈয়দা জাকিয়া নূর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু ইদানিং ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই যাচ্ছে। এসব পৈশাচিক নির্যাতন বন্ধে বিচারিক শাস্তির মাত্রা বৃদ্ধি করতে হবে। তবে কোন সভ্য দেশ বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সমর্থন করে না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল