গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলন ও ফ্রান্সে দ্বিপক্ষীয় সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল বুধবার বিকাল ৪টায় তিনি এই সংবাদ সম্মেলনে আসছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে দুই সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে গত ১৪ নভেম্বর দেশে ফিরেন। কপ-২৬ বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে এবং অন্যান্য ইভেন্টে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী গত ৩১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরে স্কটল্যান্ডের বন্দরনগরী গ্লাসগো যান। সেখানে অবস্থানকালে ১ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ ইভেন্ট ক্যাম্পাসে (এসইসি) কমনওয়েলথ প্যাভিলিয়নে ‘সিভিএফ-কমনওয়েলথ হাই লেভেল প্যানেল ডিসকাসন অন ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে যোগ দেন। কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসির সঙ্গে একটি বৈঠকের পর তিনি কপ-২৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন এবং একই অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ প্যাভিলিয়নে ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি-দ্য ক্রিটিক্যাল ডিকেড’ শীর্ষক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। একই দিন বিকালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে তিনি কপ-২৬ এর একটি ভিভিআইপি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কটল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। ২ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী স্কটিশ প্যাভিলিয়নে ‘ওমেন অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। পরে কমনওয়েলথ সংবর্ধনায় যোগ দেন। বিকালে প্রিন্স চার্লস শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পরে তিনি ইউকে মিটিং রুমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে পৃথকভাবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। তিনি সভাকক্ষ-৪ এ ‘ফোর্জিং এ সিভিএফ কপ২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী ‘ওয়ার্ল্ড লিডার্স সামিট’র সমাপনী পর্বেও অংশগ্রহণ করেন। সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা স্কটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার অ্যালিসন জনস্টোন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। স্কটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ভিশন ফর গ্লোবাল ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
৩ নভেম্বর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে লন্ডনের উদ্দেশ্যে গ্লাসগো ত্যাগ করেন। ওইদিন লন্ডনে পৌঁছার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোইলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ : বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ’, বঙ্গবন্ধুর ওপর সিক্রেট ডকুমেন্টের আন্তর্জাতিক প্রকাশনা এবং লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ৯ নভেম্বর সকালে তিনি এবং তাঁর সফরসঙ্গীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্যারিসের উদ্দেশ্যে লন্ডন ত্যাগ করেন। একই দিন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পৌঁছার পরপরই শেখ হাসিনা এলিসি প্যালেসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই দিনই তিনি ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন কাস্টেক্সের সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন ম্যাটিগননে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রী ইউনেস্কো সদর দফতরে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম এবং ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সফরের শেষ মুহূর্তে শেখ হাসিনা ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের নাগরিক সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি যোগদান করেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ