বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অভিজ্ঞতা অনেক পুরনো। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্যই বাংলাদেশের জন্মই হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, এগুলো আমাদের রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি। আজ রবিবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব ও বাহিনীর বর্তমান-সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনকে চিঠি পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিক জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ৩১ ডিসেম্বর মোমেনের সাক্ষরিত এই চিঠি দূতাবাসের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।
এই চিঠির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, এর আগে ব্লিংকেনের সাথে আমার ফোনালাপ হয়েছে। তখন যে কথা হয়েছিলো সেগুলোই চিঠিতে লিখেছি। তিনি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে তার সরকারের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চিঠিতে আমি লিখেছি, আমাদের এখানে গণতন্ত্র চর্চা আজকের না। যখন আমেরিকা আবিষ্কৃত হয়নি, সেই ছয় শতকেও এই অঞ্চলে গণতন্ত্র ছিল। ফলে গণতন্ত্রের অভিজ্ঞতা আমাদের অনেক পুরনো। আর আমাদের দেশের জন্মই তো গণতন্ত্রের জন্য।
মন্ত্রী বলেন, র্যাবের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে অভিযোগ তা অমূলক। বাংলাদেশে ১০ বছরে ৬০০ জন নিখোঁজের অভিযোগ তোলা হলেও আমেরিকাতে প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে এবং পুলিশি কারণে হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে। এসব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলছে না। তাদের গুলোকে বলা হয় লাইন অব ডিউটি। অথচ আমাদের এখানকার সামান্য কিছু ঘটনা নিয়ে অনেক কথা হয়। বলা হয় ‘এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং’। এসব হাসির খোরাক। ফলে আমার মনে হয় তাদের নিষেধাজ্ঞা সঠিক হয়নি। এটি পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে। চিঠিতে এ কথাই লিখেছি। র্যাব বাংলাদেশে মাদক, সন্ত্রাস রোধে সফলতা দেখিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছরের সম্পর্ক। সব কিছুর আলোকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য লিখিত অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এখনো চিঠির কোনো জবাব পাওয়া যায়নি জানিয়ে মোমেন বলেন, তারা তো এখন ক্রিসমাসের ছুটিতে আছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ তুলে র্যাবের বর্তমান-সাবেক ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বাইডেন প্রশাসন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর