শিপ টু শিপ ট্রান্সফার (এসটিএস) সিমুলেশন কোর্স জাহাজের ক্যাপ্টেনদের আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। এ কোর্সের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনকারী ক্যাপ্টেনরা দেশে এলপিজি ও এলএনজি গ্যাস নিয়ে আসা জাহাজগুলোতে সার্ভিস দেবে। একই সাথে প্রশিক্ষিত ক্যাপ্টেনরা বিদেশি কাজ করতে পারবেন। এতে দেশের মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও হবে। দেশে প্রথমবারের মত আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এসটিএস সিমুলেশন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন বক্তরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির নবনির্মিত সিমুলেশন সেন্টারে কোর্সটি শেষ হয়। বসুন্ধরা গ্রুপ ও বেলজিয়ামের এক্সমার এ কোর্সের আয়োজন করে। এতে বেলজিয়াম ও ভারতের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে এলপিজি ও এলএনজি গ্যাস শিপ টু শিপ ট্রান্সফারের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
বসুন্ধরা গ্রুপের শিপ অ্যান্ড লজিস্টিক্সের সিও ক্যাপ্টেন রুহুল আমিন বলেন, ‘আমাদের গ্যাস ক্যারিয়ার পরিচালনায় অভিজ্ঞতা ছিল না। বিদেশি এক্সপার্টদের সহায়তায় আমরা এসটিএস শুরু করি। আমাদের প্রতিদিন ৫ হাজার ডলার দিয়ে কি পারসন হায়ার করে আনতে হচ্ছে। অর্থ সাশ্রয় করতে দেশীয় ক্যাপ্টেনদের অভিজ্ঞ করতে আমরা ৬ জনকে ট্রেনিং দিয়েছি। অচিরে আরো প্রশিক্ষণ দেব। স্টোরেজ ভ্যাসেলের মাধ্যমে আমরা পুরো দেশকে সাপোর্ট দিতে চাই। এক্সমারের সাথে যৌথভাবে বসুন্ধরা গ্রুপ সব ধরনের জাহাজের ক্রুদের ট্রেনিং করাবে। এদেশের ক্রুদের বিদেশ পাঠানো হবে। আরও বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। তাদের চাকরির ব্যবস্থা হবে। ’
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসেন বলেন, ‘মেরিন একাডেমিতে এসটিএস কোর্স চালু করতে পেরে আমরা গর্বিত। বেলজিয়ামের বিখ্যাত কোম্পানি এক্সমার ও বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় একাডেমির সিমুলেশন সেন্টারে এ কোর্স চালু হয়েছে। আশা করি আগামীতেও এটি চালু থাকবে।’
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া ক্যাপ্টেন নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘এ কোর্সের মাধ্যমে অনেক দক্ষতা অর্জন করেছি। কোর্সে থিওরি পার্টে ইক্যুইপমেন্ট টেস্ট, উপকরণ রেডি করা, দুই জাহাজের মাঝখানে ফ্যান্ডার (রাবার) বসানো, কোন সাইজের জাহাজের রশি কত বড় হবে, এসটিএস উপযোগী কিনা, কী কী উপকরণ লাগবে ইত্যাদি শেখানো হয়। অপটিমোর সফটওয়্যার দিয়ে অ্যানালাইজ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিমুলেশন পার্টে ডাইরেক্ট অপারেশন শেখানো হয়। স্রোতের তীব্রতা, বাতাসের দিক পরিবর্তন ও জাহাজের আকার পরিবর্তনসহ তাৎক্ষণিক নানা চ্যালেঞ্জের প্রতিকূল পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় তা দেখানো হয়। এ কোর্সে যে দক্ষতা অর্জন করেছি তাতে অন্যদেরও সহায়তা করতে পারবো।’
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির সিনিয়র নটিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর ক্যাপ্টেন মো. তারেক আলী বলেন, ‘টেকনিক্যাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ কোর্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রেনিং রেগুলার হলে ফিউচারে দেশের এসটিএস নিরাপদ হবে।’ কোর্সে অংশ নেওয়া দেশের প্রথম পিওএসি মুরাদ হোসেন বলেন, ‘দেশে প্রথম ভেরি লার্জ গ্যাস ক্যারিয়ার এনেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এতে বাংলাদেশি মেরিনারদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে। এসটিএস অপারেশনের জন্য এ কোর্স জরুরি ছিল।’
বিডি-প্রতিদিন/শফিক