বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল সোমবার এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সাতটি পরীক্ষা করানো হয়। তার মধ্যে অর্ধেক টেস্টের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। ফলে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। সবগুলো রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
কাজেই শারীরিক অবস্থা ভাল কিংবা খারাপ কোনোটাই বলতে নারাজ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের মতোই আছে। ভাল কিংবা খারাপ কোনোটাই বলা যাবে না। সবগুলো টেস্টের রিপোর্ট হাতে আসার পর সেগুলো পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ড বলতে পারবে তার অবস্থা এবং পরবর্তী করণীয় কী।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ওই দিন বিকালে হাসপাতালে তার সাতটি পরীক্ষা করানো হয়। পরে মেডিকেল বোর্ড তাকে ভর্তি না করিয়ে বাসায় নেওয়ার পরামর্শ দেয়।
অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন আরো বলেন, হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাতটি পরীক্ষা করানো হয়েছিল। এর আগে পরীক্ষায় ম্যাডামের তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। একটিতে রিং লাগানো হয়। বাকি দুটির চিকিৎসা হবে। এনজিওপ্লাস্টির পর ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রুটিন চেকআপ করাতে হয়। সেজন্য ইসিজি, ইকো, আলট্রাসনোগ্রাফ, এক্সরে করানো হয়েছে। এছাড়া রক্তের বেশ কয়েকটি পরীক্ষাও করানো হয়। রিপোর্টগুলো পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ড পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।
চেয়ারপারসনের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
খালেদা জিয়ার অপর একজন চিকিৎসক জানান, কয়েকদিন ধরে চেয়ারপারসনের শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করছিল। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বাসায় গিয়ে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। এরপর কিছু পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
গত বছরের এপ্রিলে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর জুন পর্যন্ত তাকে পাঁচ দফা এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা দুই সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সর্বশেষ ২৪ জুন বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। ১০ জুন গভীর রাতে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি রিং পরানো হয়। চিকিৎসকরা তখন তার হৃদযন্ত্রে আরও দুটি ব্লক ধরা পড়ার কথাও জানান। ৭৮ বছর বয়সি খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন