২১ নভেম্বর, ২০২৩ ১৭:৪৫

রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের দেওয়া আগুনে পুড়ে নারীর মৃত্যু

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের দেওয়া আগুনে পুড়ে নারীর মৃত্যু

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হারেজের ছেলে জুয়েলের দেয়া আগুনে দগ্ধ বিউটি বেগম (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। 

সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তার মৃত্যু হয়। আগুনে তার শরীর ৭৫ ভাগ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম। 

এর আগে জমি সংক্রন্ত জের ধরে সোমবার বিকালে উপজেলার ভক্তবাড়ি এলাকায় বিউটি বেগমের বাড়িতে আগুন দেয় হারেজের ছেলে জুয়েল। এ ঘটনায় হাবিবুর রহমান হারেজসহ ৩০ জন নামীয় ও অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনের নামে রূপগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সাইদ নামে একজন আসামি গ্রেফতার হলেও বাকিরা সব পলাতক রয়েছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হারেজের সঙ্গে একই এলাকার জমি ব্যবসায়ী জাহের আলীর সঙ্গে ৮ শতাংশ একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে সোমবার সকালে দু'পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে হাবিবুর রহমান ও তার ছেলে মো. মতিন মারধরের শিকার হন। ঝগড়ার সময় বিউটি বেগমের ছেলে বেলায়েত হোসেন জাহের আলীর পক্ষ নেয় বলে অভিযোগ ছিল হারেজ পক্ষের। এরই জের ধরে বিকালে হারেজের আরেক ছেলে সন্ত্রাসী জুয়েল বড় বড় রামদা ও দেশীয় অস্ত্রসহ বাহিনী নিয়ে বিউটি বেগমের বাড়িতে হামলা চালায়। 

হামলার এক পর্যায়ে তারা বিউটি বেগমের বাড়িঘর ভাঙচুর করে ঘরের দরজায় পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ঘরের পাশে থাকা রান্নাঘরে ছড়িয়ে পড়লে বিউটি বেগম দগ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিউটি বেগমের মেয়ে শিমুও কিছুটা দগ্ধ হন। পরে আশপাশের লোকজন এসে বিউটি বেগম ও শিমু আক্তারকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বিউটি আক্তারকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই রাতে তার মৃত্যু হয়।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, হারেজের ছেলে জুয়েল এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপ লালন করে। পান থেকে চুন খসলেই সন্ত্রাসী হামলা করে যে কারোর উপর। আর এসব কিছুর মদদ দেয় সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেজ। হারেজ ও তার ছেলেদের অত্যাচারের ভয়ে এলাকাবাসী তটস্থ থাকে সব সময়। 

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন জানান, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং তা হত্যা মামলা হিসাবে গণ্য হবে। আসামি একজন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর