বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৬২৫ জন নিহত এবং ১৮ হাজার ৩৮০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ। তবে হতাহতের এই সংখ্যা চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
আকমল হোসেন আজাদ বলেন, আন্দোলনে আহত ছাত্র ভাইদের মধ্যে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন, তেমন কোনও দায়ভার থাকলে জাতির কাছে আমরা পার পাবো না। সেজন্য আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি। আহত ছাত্রদের বিদেশে চিকিৎসার জন্য চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ বিমান বিনামূল্যে টিকিট দিয়েছে। কেউ না দিলেও আমরা ব্যবস্থা করবো।তিনি আরও বলেন, কতজন ছাত্র বা জনতা হতাহত হয়েছেন সে ব্যাপারে একটি টাস্কফোর্স বা কমিটি হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের একজন সাবেক স্বাস্থ্য সচিবের নেতৃত্বে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সংখ্যাটি নিরূপণের জন্য চেষ্টা করছেন। আমাদের ডাটাবেইজ, কমিটির তথ্য ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্যে একটি সংখ্যা জানাতে চাই। তবে এটিই চূড়ান্ত নয়।
এসময় সচিব বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ১৮ হাজার ৩৮০ জন আহত হয়েছেন, ৬২৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করার চেষ্টা করছি। আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা হলো বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডাটা এন্ট্রির মাধ্যমে সেবাদানকারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ভবিষ্যৎ যেকোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করা। আমাদের ক্যাপাসিটি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যেটা ভেঙে পড়েছে সেটার কারণ অবহেলা। অন্যায্য দাবি পূরণ করা।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এই আন্দোলন দমনে তৎকালীন শেখ হাসিনার সরকার আগ্নেয়াস্ত্রের বাড়াবাড়ি রকমের ব্যবহার করে বলে অভিযোগ ওঠে। জুলাইয়ের মাঝমাঝিতে কয়েক শ’ ছাত্র-জনতার প্রাণ ঝরে। পরে সেই আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়।
এই আন্দোলন দমনে হাসিনার সরকার আরও কঠোর হয়। নির্বিচারে ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ওই সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে চলে যান। ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
বিডি প্রতিদিন/একেএ