এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে। সরকারের মান-অভিমানের কোনো সুযোগ নেই। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে।
রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দাবি জানান।
তারেক রহমানের এই বক্তব্য তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও প্রকাশ করা হয়। সভায় এনপিপি সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ সভাপতিত্ব ও মহাসচিব মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা পরিচালনা করেন।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে দেখা করে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে-বিদেশে সম্মানিত, দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে জনগণ দেশের ইতিহাসে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দেখতে পারবে।
তারেক রহমান জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান। বলেন, ‘এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা যারা রাজপথে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম, তারা সমর্থন অব্যাহত রেখেছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দলের ভিন্ন ভিন্ন আদর্শ থাকতে পারে। তবে নিজ নিজ দলীয় আদর্শে বিরোধ থাকলেও আশা করি ফ্যাসিবাদ উত্থান প্রতিরোধে সবাই ৫ আগস্টের মতোই ঐক্যবদ্ধ থাকবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের হয়তো নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতার সংকট নেই। তবে অবশ্যই এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়। সরকার যেহেতু জবাবদিহিমূলক নয়, সেহেতু নৈতিক কারণেই সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের কাছে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, জনগণকে অন্ধকারে রেখে ও রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে কোনো পরিকল্পনায় কার্যত টেকসই হয় না, হবেও না। তা ছাড়া নির্বাচিত সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকার সব দায়িত্ব পালন করবে, জনগণ এমনটি আশাও করে না। তারপরও সরকারকে নিয়মমাফিক কিছু কাজ করতে হয়।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে প্রতিনিয়ত অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। এ কারণে আমরা দেখছি প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দাবিদাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসছে। যদিও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের দাবিদাওয়া শোনার কেউ নেই এখন।’
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠায় গড়িমসির সুযোগ নিয়ে পতিত স্বৈরাচার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করে জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট তাঁবেদার অপশক্তির পথরোধ করা সম্ভব।
বিডি প্রতিদিন/মুসা