উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং অন্তত ২০০ জন দগ্ধ হয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারহান হাসান জানান, 'আগুনে জ্বলতে থাকা প্লেনটা আমার চোখের সামনেই একটি ভবনে আঘাত করে।'
সোমবার (২১ জুলাই) ফারহানের একটি পরীক্ষা ছিল। দুপুর ১টার দিকে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিল সে। এমন সময় হঠাৎ করেই বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি তাদের সামনে আছড়ে পড়ে।
ফারহান বলে, ‘আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ড, যে পরীক্ষার হলে একসঙ্গে ছিল, আমার চোখের সামনেই মারা গেছে। স্কুল গেটের ভেতরে অনেকগুলো গার্ডিয়ান দাঁড়িয়ে ছিল, আর ছোটরা বের হচ্ছিল, ছুটির টাইমে। তখন গার্ডিয়ানসহ প্লেনটা নিয়ে গেছে।’
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল ছুটি হবে হবে এমন সময় বিমানটা সরাসরি জুনিয়র সেকশনের বিল্ডিংয়ে আঘাত করে, যেখানে নার্সারি, ওয়ান, টু, থ্রি—এসব শ্রেণির ক্লাস হয়। বিল্ডিংয়ের গেটে একেবারে গর্ত হয়ে আগুন ধরে যায়।’
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ঘটনার কিছু ভিডিওতেও স্কুলের বাগান সংলগ্ন একটি ভবনের নিচতলায় বিধ্বস্ত বিমানের ইঞ্জিনে আগুন জ্বলার দৃশ্য দেখা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। সেই সঙ্গে চলতে থাকে উদ্ধার তৎপরতা।
এ ঘটনায় বিমানটির পাইলট ও স্কুলের শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে। হতাহতদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও রয়েছেন।
এদিকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ অনেককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের বেশির ভাগই শিশু শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার মঙ্গলবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। ঘটনাটি কিভাবে ঘটল, সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
বিডি প্রতিদিন/মুসা