গার্ডিয়ান্স অব দ্য নর্থের এক সদস্যের ফাঁদে পা দিয়ে ১৩ বছর বয়সী মেয়ের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন বাংলাদেশি অপু রায়হান। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের আদালত তাকে এক বছরের ‘সাসপেনডেড প্রিজন’ (স্থগিত দণ্ডাদেশ) সাজা দিয়েছে। এক বছরের ‘সাসপেনডেড প্রিজন’ দণ্ডের মানে হলো এক বছরের মধ্যে পুনরায় একই অপরাধ করলে তাকে জেলে যেতে হবে। ঘটনাটি যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল শহরের। ২৯ বছর বয়সী অপু রায়হান অনলাইনে এক মেয়ের সঙ্গে চ্যাট করছিলেন। ওই মেয়ে যৌন বিষয়ে আলাপে আগ্রহ দেখানোর পাশাপাশি রায়হানকে বার বার স্মরণ করিয়ে দেয় যে তার বয়স ১৩ বছর। একপর্যায়ে তারা যৌনসঙ্গমে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে স্থানীয় মিলেনিয়াম ব্রিজে সাক্ষাতে সম্মত হয়। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ে মিলেনিয়াম ব্রিজে গিয়েই ফেঁসে যান রায়হান।
আসলে তিনি অনলাইনে ১৩ বছর বয়সী কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বলেননি। বলেছেন, শিশু যৌন নিপীড়ক ধরতে কাজ করা গার্ডিয়ান্স অব দ্য নর্থের এক সদস্যের সঙ্গে। তারা সেখানে আগাম পুলিশ নিয়ে হাজির থাকে। সেখানেই গ্রেফতার হন রায়হান। তিনি স্থানীয় কোনডারকাম রোডের বাসিন্দা। মঙ্গলবার নিউক্যাসল ক্রাউন কোর্টের শুনানিতে প্রসিকিউটর ডেভিড ক্রুক বলেন, কেবল এক দিনের কথাবার্তায় তারা সাক্ষাতের জন্য মনস্থির করেন। জিজ্ঞাসাবাদের শুরুতেই রায়হান দোষ স্বীকার করেছেন। রায়হানের পক্ষের আইনজীবী নিক কার্টমেল আদালতে বলেন, রায়হান পেশাদার শিশু যৌন নিপীড়ক নন। তিনি অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং তিনি অত্যন্ত দুঃখিত। হোম অফিস তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং তিনি এ দেশে আর থাকতে পারবেন না। তাকে ডিটেনশন সেন্টারে (বিতাড়নের আগে অভিবাসীদের যেখানে রাখা হয়) রাখা হবে। তার অতীত কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই বলেও বিচারকের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেন আইনজীবী। বিচারক বেনজামিন নোলান বলেন, ‘এটা কেবল অপরাধ সংঘটনের পদক্ষেপ ছিল। যার সাজা এক বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু যেহেতু অতীত কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই, সেজন্য এই এক বছর আমি স্থগিত করছি।’ বিচারক বলেন, সাজা স্থগিতের বাস্তবিক কোনো উপকার রায়হান হয়তো পাবেন না। কারণ তার যুক্তরাজ্যে থাকার বৈধতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্র দফতর (হোম অফিস) সম্ভবত তাকে বাংলাদেশে বিতাড়নের উদ্যোগ নেবে। তবে যুক্তরাজ্যে থাকলে তাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত ‘সেক্সুয়াল প্রিভেনশন অর্ডার’ মেনে চলতে হবে এবং ১০ বছর পর্যন্ত ‘সেক্স অফেন্ডার্স রেজিস্টার’-ুএ সই করতে হবে।
যুক্তরাজ্যে অস্থায়ীভাবে যারা বসবাস করছেন, তারা কোনো অপরাধে সাজা পেলে তাদের ভিসাও বাতিল হওয়ার নিয়ম। তবে এ সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র দফতর।
