ছাত্র আন্দোলনে বিরোধিতা, শিক্ষাঙ্গনে দলীয়করণ, নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িতদের পদত্যাগের দাবিতে খুলনায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার ও প্রো-ভিসি ড. সোবহান মিয়ার পদত্যাগ দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে মিছিল-সমাবেশ করেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুকৃবি) নিয়োগ বাণিজ্য অর্থ আত্মসাৎ ও দলীয়করণের অভিযোগে রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের অব্যাহতি দাবি করেছেন ছাত্ররা। দলীয় প্রভাবে শিক্ষকদের বিভিন্ন সময় হেনস্তা করার ঘটনায় সিটি করপোরেশন পরিচালিত কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কেসিসি উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ মো. তৌহিদুজ্জামান চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন।
জানা যায়, কয়েক বছরে কুয়েটে নিয়োগ বাণিজ্য, দলীয়করণ, শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানি, সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতাসহ নানা অভিযোগে ভিসি, প্রো-ভিসি দুজনই ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করছেন। গত ৬ আগস্ট কুয়েট খুলে দেওয়া হলেও ছাত্রদের তোপের মুখে পড়ার ভয়ে ভিসি ও প্রো-ভিসি কেউই কর্মস্থলে আসেননি। ফলে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ দুজন পদত্যাগ না করলে তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।
গতকাল এ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে মিছিল বের হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে শেষ হয়। বক্তৃতা করেন- অধ্যাপক ড. আফতাব হোসেন, ড. এম এম হাশেম, ড. শাহজাহান, রাজিয়া খাতুন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টিং ভিসি অধ্যাপক ড. সাইদুল ইসলামসহ সাধারণ শিক্ষক-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অপর দিকে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনে হুমকি প্রদান, নিয়োগ বাণিজ্য, দলীয়করণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণেœর অভিযোগে রেজিস্ট্রার মাজহারুল আনোয়ারের পদত্যাগ দাবি করেছেন ছাত্ররা। রেজিস্ট্রার পদে চাকরিতে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা না থাকলেও তিনি শর্তভঙ্গ করে নিয়োগ পেয়েছেন। ক্লাস চলাকালীন রুটিন বাস সার্ভিস বন্ধ করে ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাস প্রদান ও ক্যাম্পাসকে প্রায় শতভাগ দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া শিক্ষক-অভিভাবকদের চাপের মুখে গতকাল কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কেসিসি উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ মো. তৌহিদুজ্জামান চাকরিতে ইস্তফা দেন। তিনি সিটি মেয়র বরাবর এক চিঠিতে জানান, শারীরিক অসুস্থতা ও শিক্ষক-কর্মচারীদের অনাস্থার কারণে চাকরিতে ইস্তফা প্রদান করছি। জ্যেষ্ঠ শিক্ষক রোজিনা আক্তারের কাছে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।