ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পুকুর থেকে এক ছাত্রের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকালে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে প্রশাসন ভবন ও প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভুয়া ভুয়া স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। সাঁতার জানার পরও পানিতে ডুবে মৃত্যুকে রহস্যজনক মনে করছেন স্বজন ও সহপাঠীরা। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুকুর থেকে আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র সাজিদ আবদুল্লাহর লাশ উদ্ধার করা হয়।
গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এতে শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন সংহতি জানিয়ে অংশ নেয়। তারা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ এবং মৃত্যুকে রহস্যজনক আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করে। পরে বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও থানা আটকে দেয়। বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লিখিতভাবে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করে তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা লাশ দেখে প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। জানানোর প্রায় এক ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে থানা হওয়ার পরও পুলিশ আসতে এত সময় লাগল কেন? সেখানে কোনো ডাক্তার বা অ্যাম্বুলেন্স আসেনি। আমরা বাধ্য হয়ে ভ্যানে করে লাশ মেডিকেলে নিয়ে যাই।’ তাঁদের দাবিগুলো হলো, দ্রুত সময়ে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট প্রকাশ, ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের অ্যান্ট্রি ও এক্সিট শতভাগ মনিটরিং, ক্যাম্পাসের চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও সক্রিয় রাখা এবং বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা।
এদিকে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে টর্চ লাইট মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। নিরাপদ ক্যাম্পাস, শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিতসহ নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন না দিলে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় তারা।
একই দাবিতে রাত সাড়ে ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত আবাসিক ছাত্রীরা হলগুলোতে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন। তাঁরা বলেন, ‘নিজ চোখে সাজিদের লাশ ভাসতে দেখেছি। প্রশাসনকে ফোন করার দুই ঘণ্টা পর তারা এসেছে।
যেখানে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ স্টেশন ছিল পাঁচ মিনিটের দূরত্ব। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়। এর জবাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নকীব নসরুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছি। তাদের দাবিসমূহ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছি।’