বাংলাদেশি তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের বাসিন্দা দুই পরিবারকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্ট। রায়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকেই তাদের ফিরিয়ে আনার কাজ করতে হবে মর্মে নির্দেশ দেন আদালত। গতকাল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেন। রায়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ৯ মাসের গর্ভবতী নারী সোনালী বিবিসহ দুই পরিবারের ছয় সদস্যকে বীরভূমে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকেই তাদের ফিরিয়ে আনার কাজ করতে হবে মর্মে নির্দেশ দেন আদালত। হাই কোর্টের এই নির্দেশ কার্যকরের ওপরে ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ চায় কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের সেই আবেদনও খারিজ করে দেন আদালত। সোনালী বিবির পরিবারের দাবি, বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা হলেও তারা গত এক দশক দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন। কাজের সূত্রে স্বামী দানিশ শেখ এবং পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে দিল্লির রোহিণীর ২৬ নম্বর সেক্টরে থাকতেন সোনালী বিবি। বাংলাদেশি সন্দেহে চলতি বছরের ১৮ জুন তাদের গ্রেপ্তার করে দিল্লির কে এন কাটজুমার্গ থানার পুলিশ।
২৭ জুন তাদের আসাম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়। বাংলাদেশে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় নবাবগঞ্জ পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে বলে জানা যায়। একইভাবে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে বীরভূমেরই বাসিন্দা সুইটি বিবি এবং তার দুই ছেলেকেও গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় দিল্লি পুলিশ। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা বা তথ্য যাচাই না করেই ছয়জনকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সোনালী বিবিসহ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের এই আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড ও কয়েকটি এনজিও। তখন নাগরিকত্বের বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কলকাতা হাই কোর্টকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল সেই মামলার শুনানি গ্রহণ করে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সোনালী বিবি, সুইটি বিবিসহ ছয়জনকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন হাই কোর্ট।