৯৩ বছরে পদার্পণকারী মুক্তিযুদ্ধে ৪ নম্বর সেক্টর কমান্ডার জেনারেল সি আর দত্ত বীর উত্তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশ ও প্রবাসের সকল বাঙালিকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। ২৬ মার্চ মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্ক সিটি সংলগ্ন লং আইল্যান্ডে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলার সময় জেনারেল দত্ত বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্যে গভীর সন্তোষ প্রকাশ এবং মুুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনার যে অভিযাত্রা চলছে তার পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
‘একাত্তরের মত ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য পুনরায় তৈরি হলে বাংলাদেশকে কেউই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না’-দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন জেনারেল দত্ত।
‘সবাই মিলে আমরা যুদ্ধ করেছি, দেশটাকে স্বাধীন করেছি। এটা আমাদের পরম গৌরবের একটি বিষয়। প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার জন্য এ এক ভিন্ন ধরনের অহংকার,’ উল্লেখ করেন জেনারেল দত্ত।
৪৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম এবং আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’র পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এই মুক্তিযোদ্ধাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। নেতৃত্ব দেন ফোরামের প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ এবং প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার।
সঙ্গে ছিলেন ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আল আমিন এবং শাহ জে চৌধুরী। এ সময় তাকে লাল-সবুজের উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়। তা পেয়ে ভীষণভাবে আপ্লুত হন তিনি।
অভিভূত সি আর দত্ত বলেন, ‘আপনারা মাঝেমধ্যেই এলে খুব ভালো লাগে। মনে হয় বাংলাদেশে আপন ভুবনে রয়েছি। একাত্তরের কথা, বাংলাদেশের কথা-সবকিছু স্মৃতিপটে ভেসে উঠে।’
সি আর দত্ত তার ছেলে রাজা দত্তের বাসা এবং মেয়ে ডা. মহুয়া দত্তের বাসায় অবস্থান করেন ভাগাভাগি করে অর্থাৎ যখন যেখানে ভালো লাগে সেখানে দিনাতিপাত করছেন। টিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রিন্ট কপি হচ্ছে তার নিয়মিত সঙ্গী। নাতি-নাতনীরা বাসায় থাকলে ওদের নিয়েই মেতে থাকেন জেনারেল দত্ত।
রাজা দত্ত জানান, এই বয়সেও বাবা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। নিজের হাতে পছন্দের খাবারও গ্রহণ করেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুুক্তিযোদ্ধাদের সান্নিধ্যে নিজের হাতে মিষ্টি খেলেন।
জেনারেল দত্ত সকলকে শুভেচ্ছার পাশাপাশি নিজের জন্যে দোয়া চেয়েছেন বাকিটা জীবন যাতে সুন্দরভাবে অতিবাহিত করতে পারেন। বাংলাদেশে যাবার প্রচন্ড ইচ্ছা থাকলেও দীর্ঘ পথ বিমানে থাকার অনুমতি নেই। ‘আপনারা সবাই ভালো থাকুন, এক হয়ে থাকুন, এটাই আমি আশা করবো,’ বিদায় দিতে দরজায় আসা দত্তের আকুতি।
শুভেচ্ছা বিনিময়কালে জেনারেল দত্তের দুই নাতী এলে সকলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। দু’জনের নাম রাখা হয়েছে লাল-সবুজের পতাকা আদলে। জ্যেষ্ঠ নাতির নাম নীল এবং কনিষ্ঠজনের নাম লাল। তার পুত্রবধূও গর্বিত স্বাধীনতা যুদ্ধের অকুতভয় এই সৈনিকের সেবা করার সুযোগ পেয়ে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম