২০ এপ্রিল, ২০১৯ ২২:১২

বাংলাদেশ ব্যাংকের বইয়ে ইতিহাস বিকৃতিকারীদের শাস্তি দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশ ব্যাংকের বইয়ে ইতিহাস বিকৃতিকারীদের শাস্তি দাবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রন্থে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে গভর্নর-ডেপুটি গভর্নরসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য।

শুক্রবার পূর্ব লন্ডনের ‘লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব’ অফিসে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ইউকে এর উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

এসময় লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফসার খান সাদেক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ড. আনিছুর রহমান আনিছ ও বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমরান চৌধুরী।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি, জীবন আলেখ্য, বাঙালি জাতির ইতিহাস এবং এই মহান নেতার ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা, সংরক্ষণ এবং এই মহানায়কের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন যেকোনো প্রয়াসকে কঠোরভাবে প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য যাত্রা শুরু করে। 

আফসার খান সাদেক বলেন, ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রথম লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। শত প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এই আন্তর্জাতিক স্থাপনা এখন লন্ডনের আগত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটক এবং সুধী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী দিনে এরকম আরো অনেক গঠনমূলক উদ্যোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাব।

এসময় লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস নিয়ে একটি গ্রন্থ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ ইতিহাস গ্রন্থে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তভুর্ক্ত করা হয়নি। বরং এই ইতিহাস গ্রন্থে পাকিস্তানের সামরিক জান্তা আইয়ুব খান ও মোনায়েম খানের ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এই ইতিহাস গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রকাশ না করায় ইতিহাস বিকৃত হয়েছে বলে মনে করে’ হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। 

পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ গ্রন্থের পাণ্ডলিপি তৈরি ও প্রকাশনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ২০১৩ সালের জুন মাসে। তখন উপদেষ্টা কমিটি ও সম্পাদনা নামে দু’টি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি দুটি’ পাণ্ডলিপি চূড়ান্তের পর গ্রন্থটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি প্রকাশনার পরপরই এতে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যত্যয় পরিদৃষ্ট হলে গ্রন্থটি রিভিউয়ের জন্য একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি-এ যুক্তিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত উল্লেখ করা হয়। 

সম্মেলনে এই ইতিহাস বিকৃতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সংশ্লিষ্ট ডেপুটি গভর্নরসহ জড়িত সকলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। 

বক্তরা বলেন, ইতিহাস বিকৃতি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস গ্রন্থে এই ধরনের বিকৃতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই কারণে জাতির জনকের মর্যাদা ব্যাহত করার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অপরাধ হিসেবে গণ্য করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করার জন্যে ও আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ঘটনা থেকেই এ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ফেডারেশনের সভাপতি আহাদ চৌধুরী বলেন, আগামী দিনে ওয়েস্ট মিনিস্টার এ হাউস অফ পার্লামেন্টের সামনে মহাত্মা গান্ধী ও নেলসন ম্যান্ডেলার পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের দাবিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবেন। 


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর