১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৫:০৫

দুই শতাংশ প্রণোদনার বিষয়টি জানেন না অনেক প্রবাসী

মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব

দুই শতাংশ প্রণোদনার বিষয়টি জানেন না অনেক প্রবাসী

বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে ঘোষণা করা হয়েছে দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, প্রণয়ন করা হয়েছে নীতিমালা। তবে এই প্রণোদনার কথা জানেন না অনেক প্রবাসী। যারা জানেন, তারা বলছেন টাকা পাঠিয়ে পাচ্ছেন না সুবিধা। তৎপরতা নেই সৌদিতে থাকা একমাত্র রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের প্রতিনিধি অফিসের। আর দূতাবাস বলছে প্রজ্ঞাপন হাতে এসেছে, শিগগিরই শুরু হবে বাস্তবায়ন। 

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো টাকায় ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। মূলত বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে এবং হুন্ডি ব্যবসা নিরুৎসাহিত করতে এ ঘোষণা দেয়া হয়। গত ৬ আগস্ট এই বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ১ জুলাই থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের সুবিধাভোগীরা এ প্রণোদনা পাবেন। 

দেড় হাজার ডলার পর্যন্ত অর্থ পাঠানো যাবে কোন ধরনের কাগজপত্র ছাড়া। এর বেশি হলে জমা দিতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। বাজেট ঘোষণার ৩মাস পেরিয়ে গেলেও এই সুবিধা পাচ্ছেন না প্রবাসীরা। টাকা পাঠানোর পর ব্যাংকে যোগাযোগ করেও কোন সদুত্তর পাচ্ছেন না প্রবাসীদের স্বজনরা।

রিয়াদ প্রবাসী চাকরিজীবী ফেনীর জিয়াউর রহমান বলেন, আমি নিয়মিত ব্যাংকে টাকা পাঠাই। চলতি মাসেও পাঠিয়েছ। কিন্তু প্রণোদনার কোন টাকা পাইনি। ব্যাংকও এই বিষয়ে কিছু বলছে না।

এটিকে সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ উল্লেখ করে প্রণোদনার বাস্তবায়ন এবং সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর ব্যাপারে সচেতন করা গেলে রেমিটেন্স প্রবাহ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। সরকারের এই উদ্যোগের কথা অনেক প্রবাসীদের অজানা বলেও জানান তিনি।

প্রবাসী আনিসুর রহমান বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠিয়ে স্থানীয় আইনে যাতে কোন প্রবাসী ফেঁসে না যান সেদিকেও সরকারকে নজর দিতে হবে। প্রবাসীরা যাতে যে কোন পরিমাণ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনারও তাগিদ দেন এই ব্যবসায়ী।

সৌদি আরব থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য স্থানীয় ব্যাংকের রেমিটেন্স প্রতিনিধি অফিসে নাম রেজিস্ট্রেশন বাধতামূলক। আর এই রেজিস্ট্রেশন করতে হলে সেই প্রবাসীর থাকতে হবে বৈধ ইকামা বা রেসিডেন্ট পারমিট। জীবিকার সন্ধানে সৌদিতে এসে নানা কারণে অবৈধ হয়ে পড়েন অনেক প্রবাসী। তখন ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা বৈধ পথে টাকা পাঠাতে পারেন না এই প্রবাসীরা।

রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মেহেদী হাসান প্রণোদনার বিষয়ে ঢাকা থেকে প্রজ্ঞাপন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেই সাথে যারা নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন কিন্তু প্রতিষ্ঠান তাদের ইকামা নবায়ন না করার কারণে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে পারছেন না তাদেরকে দূতাবাসের শ্রম শাখায় যোগাযোগ করলে ইকামা নবায়নের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।

প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে ৬টি হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেশভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বরাবরের মতো গত অর্থবছরেও সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। দেশটিতে থাকা প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ৩১১ কোটি ডলার। যা মোট আহরিত রেমিটেন্সের প্রায় ১৯ শতাংশ। রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে প্রণোদনার পাশাপাশি বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর দিকে মনযোগী হতে এবং সংখ্যার চেয়ে দক্ষ শ্রমিকের ওপর জোর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর