বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর ডি সি এলাকায় বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের সংগঠন ডুয়াফি একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করেছে।
শনিবার (যুক্তরাষ্ট্র সময়) বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্যে ‘মুক্তির পঞ্চাশ’ শিরোনামে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
জুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানটির বিশেষ আকর্ষণ ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ। এতে অংশ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী, বীর বিক্রম, মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ, বীর বিক্রম এবং স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক প্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ হাসান ইমাম।
আলোচকরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও বীরাঙ্গনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। স্মৃতিচারণ মূলক পর্বটি সঞ্চালনা করেন ড. আশরাফ আহমেদ।
একাত্তরের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের সব মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। এটি কোনো পাক-ভারত যুদ্ধ ছিল না, মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলার মানুষের জনযুদ্ধ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন ডুয়াফির প্রেসিডেন্ট ভয়েস অফ আমেরিকায় কর্মরত সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়া। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী নেতা এ কে আজাদ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠনগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঘনিষ্টভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ডুয়াফির এই উদ্যোগের প্রশংসা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ডুয়ার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডুয়াফির সদস্যরা যাতে অংশ নিতে পারেন সে ব্যাপারে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন এ কে আজাদ।
মুক্তির পঞ্চাশ অনুষ্ঠানটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের অর্থনৈতিক পটভূমির ওপর অর্থনীতিবিদ ড. আখতার মাহমুদের সঞ্চালনায় এক প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশ নেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবুল মোকাদ্দেম আকাশ ও পারভেজ ইমদাদ।
আবৃত্তি, গান, ভিডিও প্রদর্শনীসহ একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবাসী সাবেক ছাত্র-ছাত্রী ও পরিবারের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শততম বর্ষপূর্তি বছরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করেন। এদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়ের সাথে আলাপচারিতা ও তার গান।
মারুফা ইসহাক ও এ্যান্থনী পিউস গোমেজের উপস্থাপনায় ডরথী বোসের কণ্ঠে বাংলদেশের জাতীয় সঙ্গীত ও অন্তরা রহমান দোহার কণ্ঠে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
খ্রীষ্টফার তাপস গমেজ, প্রিসিলা রড্রিক্স, ও মিলিয়া আলী গান এবং সাধক চক্রবর্তী গিটার পরিবেশন করেন। অদিতি সাদিয়া রহমান, সাদিয়া খান (জেনী) ও এ কে এম খায়রুজ্জামানের পরিবেশিত আবৃত্তি সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশুদের বাংলাদেশ নিয়ে আঁকা ছবিও প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানের শেষে ডুয়াফির সাধারণ সম্পাদক ড. ইসরাত সুলতানা মিতা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন
