বহিষ্কারের নির্দেশ অমান্য করে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অপরাধে নিউইয়র্কের এক প্রবাসীর ১.৮২০ মিলিয়ন (২২ কোটি টাকা) ডলার জরিমানা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রীম কোর্টের খ্যাতনামা এটর্নী মঈন চৌধুরী মঙ্গলবার (২০ মে) এ সংবাদদাতাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এটর্নী মঈন চৌধুরী আরও বলেছেন, ১৯৯৫ সালে তার অ্যাসাইলামের আবেদন নাকচ হয়ে যায়। এরপর সেই প্রবাসী (সঙ্গত কারণে নাম গোপন রাখা হচ্ছে) আপিলের আবেদন করেছিলেন। ২০০৭ সালে সেই আবেদনও খারিজ করেছেন মাননীয় ইমিগ্রেশন জজ। এরপর ওই বাংলাদেশি ইউএস সিটিজেনকে বিয়ে করে অভিবাসনের মর্যাদা সমন্বয়ের আবেদন করেও সফল হতে পারেননি। এ অব্স্থায় সেই প্রবাসী সিটিজেন স্ত্রী এবং যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী সন্তান নিয়ে নিউইয়র্কে বাস করছেন। সম্প্রতি তার কাছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে উপরোক্ত পরিমাণের জরিমানার তথ্য জানিয়ে চিঠি এসেছে। সিভিল প্যানাল্টির ঐ চিঠিতে ১৯৫২ সালের একটি আইন, যার সংশোধন করা হয়েছে ১৯৯৬ সালে বিল ক্লিন্টনের আমলে, তা উল্লেখ করে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি মে পর্যন্ত সময়ের জন্যে ১.৮২০ মিলিয়ন ডলারের জরিমানা অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এটর্নী মঈন চৌধুরী আরও জানিয়েছেন, এটা হচ্ছে সিভিল প্যানাল্টি। আমি চেষ্টা করছি খারিজ হয়ে যাওয়া আবেদনটি পুনরায় ওপেন করার জন্যে। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী কঠোর পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে খুব বেশী আশার আলো দেখছি না। ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নী মঈন চৌধুরী এমন পরিস্থিতির শিকার সকলের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সামর্থ্য যদি থাকে তাহলে জরিমানা দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে গেলে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী (যেহেতু স্ত্রী-সন্তানেরা ইউএস সিটিজেন) ১০ বছর পর পুনরায় ফিরতে পারবেন। তবে এই প্রবাসীর পক্ষে এত বিপুল অংকের জরিমানা পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বহিষ্কারের নির্দেশ অমান্য করলে সিভিল প্যানাল্টির বিধানের মত অভিবাসন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসার পরই যারা ফেডারেল সরকারের নানা সুবিধা নেন-সে কারণে ঐসব লোকজনকে স্পন্সরকারীর মোটা অংকের জরিমানার বিধি রয়েছে। সেটি এতদিন কার্যকর হতে দেখা যায়নি। এখন হয়তো সে বিধিও বহাল করা হতে পারে। তাই স্পন্সরের ব্যাপারে সকলে যেন সতর্কতা অবলম্বন করেন।
এদিকে, নির্বাচনি অঙ্গীকার অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতা গ্রহণের দিন ২০ জানুয়ারি থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এক লাখ ৫৮ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪ মে পর্যন্ত ডিটেনশন সেন্টারে ছিল ৪৯ হাজার জন। অবশিষ্টদের সরকারী খরচে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রেফতারের এই অভিযান আশাব্যঞ্জক না হওয়ায় মাঝখানে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুকদের ফ্রি টিকিট এবং নগদ এক হাজার ডলার করে প্রদানের বিশেষ একটি কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ অবৈধভাবে বসবাসরতদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাড়ানোর এ পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ