বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক অনন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
গত ১৭ মে (শনিবার) বাংলাদেশ সোসাইটি ফর পূজা অ্যান্ড কালচার (বিএসপিসি)–এর আয়োজনে ওয়েনওয়ার্থভিলের রেডগাম ফাংশন সেন্টারে এই জমকালো আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। প্রবাসী বাঙালিদের বিপুল উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বিএসপিসি বাংলা স্কুলের শিক্ষার্থীদের আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। পুরো অংশটি পরিচালনায় ছিলেন বাংলা স্কুলের শিক্ষকরা, শর্মিষ্ঠা চৌধুরী, লারিনা নুপূর রোজারিও, শ্রেয়সী দাস, প্রঞ্জা বর্ণিকা কর্মকার এবং প্রধান শিক্ষিকা পায়েল রায়। শিশু-কিশোরদের প্রাণবন্ত পরিবেশনা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
এরপর গীতি-আলেখ্য পরিবেশন করেন বিএসপিসি সদস্য ও অভিভাবকরা। গান, আবৃত্তি ও সংলাপের সমন্বয়ে গড়া এই অংশ বাঙালি সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্য তুলে ধরে।
প্রধান আকর্ষণ ছিল দুটি নাট্যরূপায়ণ। প্রথমটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতি-নাট্য 'চণ্ডালিকা', পরিচালনায় ছিলেন শ্রেয়সী দাস ও প্রঞ্জা কর্মকার। নাটকটি দর্শকদের আবেগে স্পর্শ করে। এরপর মঞ্চস্থ হয় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'শাস্তি' নির্দেশনায় সৌমিক দাস। নাটকটি সামাজিক বার্তা সমৃদ্ধ একটি সার্থক উপস্থাপনা ছিল।
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন আমন্ত্রিত শিল্পী অমিয়া মতিন, যিনি নজরুল গীতি পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা স্থায়ী এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিএসপিসি সভাপতি অশোক রায় এবং সাধারণ সম্পাদক তপস কুমার দে। তাঁরা সব শিল্পী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানান এবং অনুষ্ঠানের সফল আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
২০২৫ সালের এই রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে সাহিত্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংস্কৃতির প্রতি মমত্ববোধকে আরও একবার উজ্জীবিত করে তোলে। এটি ছিল কেবল তিন মহৎ কবিকে স্মরণ করার উপলক্ষ্য নয়, বরং প্রবাসে বাংলা সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হয়ে ওঠার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বিডি প্রতিদিন/মুসা