২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপকে ঘিরে কানাডার প্রাণকেন্দ্র টরন্টো এখন যেন ফুটবলের শহর। আয়োজক কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকিট বিক্রির সূচনা করতেই শহরজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। সকাল থেকেই অনলাইনে ও বিভিন্ন টিকিট সেন্টারে ফুটবলপ্রেমীদের দীর্ঘ লাইন। চারপাশে ছিল উচ্ছ্বাস আর সেলফি তোলার হিড়িক।
আয়োজক কমিটির তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দিনেই বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টিকিট। যা পূর্বাভাসের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল গ্রুপ পর্বের ম্যাচের টিকিটে। বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার জনপ্রিয় দলগুলোর খেলার টিকিট কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।
টিকিটের দাম
গ্রুপ পর্ব: ৯০-১৫০ মার্কিন ডলার
রাউন্ড অফ ১৬: ১৮০-২৫০ মার্কিন ডলার
কোয়ার্টার ফাইনাল: ৩৫০-৫০০ মার্কিন ডলার
সবচেয়ে সস্তা শ্রেণির টিকিটগুলো প্রথম দিনেই বিক্রি শেষ হয়ে গেছে।
কোন কোন ম্যাচ টরন্টোতে?
ফিফার তথ্য অনুযায়ী, বিখ্যাত বিএমও ফিল্ড স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ৬টি ম্যাচ- যার মধ্যে রয়েছে ৪টি গ্রুপ পর্ব, একটি রাউন্ড অফ ১৬ এবং একটি কোয়ার্টার ফাইনাল। ৪৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষম এই স্টেডিয়ামকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বড় আয়োজন।
ম্যাচের তারিখ (সম্ভাব্য) / ধারণক্ষমতা
১৪ জুন ২০২৬ গ্রুপ পর্ব ৪৫,০০০
১৮ জুন ২০২৬ গ্রুপ পর্ব ৪৫,০০০
২২ জুন ২০২৬ গ্রুপ পর্ব ৪৫,০০০
২৬ জুন ২০২৬ গ্রুপ পর্ব ৪৫,০০০
৩০ জুন ২০২৬ রাউন্ড অফ ১৬ ৪৫,০০০
৫ জুলাই ২০২৬ কোয়ার্টার ফাইনাল ৪৫,০০০
শহর কর্তৃপক্ষের পূর্বাভাস, বিশ্বকাপ চলাকালে প্রায় ৫ লাখ আন্তর্জাতিক দর্শক টরন্টো ভ্রমণ করবেন। এর ফলে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, পরিবহন ও বিনোদন খাতে অতিরিক্ত ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনৈতিক প্রবাহ তৈরি হবে।
শহরের হোটেলগুলো ইতোমধ্যেই বুকিংয়ে ব্যস্ত। জুন-জুলাইয়ের সময়ের জন্য অনেক হোটেল পুরোপুরি সোল্ড আউট হয়ে গেছে।
অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে টরন্টো ট্রান্সপোর্ট বিভাগ ঘোষণা দিয়েছে বাড়তি সাবওয়ে ট্রেন, বিশেষ বাস সার্ভিস, শাটল সার্ভিস। এছাড়া ম্যাচের দিনে স্টেডিয়ামসংলগ্ন এলাকায় থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং দর্শকবান্ধব তথ্যকেন্দ্র।
ফিফার টিকিট নীতি
ফিফা কর্মকর্তারা জানান, স্বচ্ছ লটারি পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রি হচ্ছে, যাতে সবাই সমান সুযোগ পান। প্রথম ধাপের বিক্রি চলবে অক্টোবরের শুরু পর্যন্ত। নভেম্বর থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপ, যেখানে অবশিষ্ট টিকিট ও প্রিমিয়াম আসন বাজারে আসবে।
২০২৬ সালের এই বিশ্বকাপ উত্তর আমেরিকার তিন দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর যৌথ আয়োজন। তবে টরন্টো ইতিমধ্যেই নিজেকে আলাদা করে তুলছে। আয়োজক কমিটি থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই প্রস্তুত, যেন শহরের ম্যাচগুলো বিশ্বকাপের অন্যতম প্রাণবন্ত ও স্মরণীয় আয়োজন হয়।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল