বই নিয়ে হৈচৈয়ের প্রসঙ্গ উঠতেই বাড়ির দিকে হাঁটা দিল আমার এক বন্ধু। আমি বললাম, কীরে, সমস্যা কী? চলে যাচ্ছিস যে? বন্ু্ল বলল, আমি কোনো গ্যাঞ্জামে জড়াতে চাই না। আমি অবাক হলাম, গ্যাঞ্জাম মানে! বই নিয়ে কি হৈচৈ হতে পারে না? এখানে গ্যাঞ্জামেরই বা কী আছে! মনে নেই ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ বইটা নিয়ে কী পরিমাণ হৈচৈ হয়েছিল? বন্ু্ল এবার মুখ বাঁকা করল, আরে কিসের মধ্যে কী! আমি আমার মুখ বন্ু্লর মুখের চেয়েও আরেক ডিগ্রি বাঁকা করে বললাম, কেন, সিনেমাকে যে মানুষ ‘বই’ বলে, তুই জীবনেও শুনিসনি? আহারে, সিনেমা নামের এই বই নিয়ে আগে কত আলোচনা হতো, কত হৈচৈ হতো! এখন আর সেই দিন নেই। বলেই আমি এমন উত্তপ্ত একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম, বন্ু্লর গায়ে লেগে তার ত্বক পুড়ে যাবার দশা হলো। বন্ু্ল এবার চলেই গেল। আমি এলাম বাসার দিকে। পাশ দিয়ে তিনটা বাচ্চা যাচ্ছিল স্কুলে। তাদের ব্যাগের সাইজ দেখে আমি তাজ্জব হয়ে তাকিয়ে রইলাম। যদিও এমন ব্যাগ নতুন দেখিনি, নিয়মিতই দেখি, তবু চোখ সরাতে পারছিলাম না। আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে এলেন আমার এক প্রতিবেশী। বললেন, আমরা তো জানি বই পড়লে জ্ঞান বাড়ে। কথা সত্য। তবে এটাও ঠিক, বই পড়লে শুধু জ্ঞানই বাড়ে না, বাচ্চারা ব্যথাও পেতে পারে। আমি বললাম, মানে কী? প্রতিবেশী বললেন, একেকটা বাচ্চার ব্যাগে কী পরিমাণ বই, চিন্তাও করতে পারবেন না। এই বইয়ের ওজন সামলাতে না পেরে যদি কোনো বাচ্চা উল্টে পড়ে যায় আর বইগুলো যদি পড়ে তার ওপর, তাহলে কি ব্যথা পাবে না? অবশ্যই পাবে। অতএব বই পড়লে শুধু জ্ঞানই বাড়ে না, বই পড়লে মানে পতিত হলে ব্যথাও বাড়ে। আমি বললাম, আজগুবি কথা বলবেন না তো! বই পড়তে যাবে কেন? প্রতিবেশী বলল, ওই যে বললাম ওজন, এই ওজনের কারণেই বই পড়ে। আমার ভাতিজার ওপর তো কদিন আগে বইয়ের তাক ভেঙে পড়েছিল। এবার বোঝেন এই যুগের বাচ্চারা রোজ কত কেজি বইয়ের ওজন সামাল দেয়! আমার এক ছোটভাই বলল, বই জিনিসটা আসলেই খুব গ্যাঞ্জামের একটা জিনিস। এই যে আমার বোন আর দুলাভাইয়ের মধ্যে গ্যাঞ্জাম, এটা কিন্তু বইয়ের কারণেই। আমি জানতে চাইলাম, কী রকম? ছোটভাই বলল, আমার বোন আর দুলাভাই প্রেম করে বিয়ে করেছেন। তাদের কিন্তু প্রেম বাধা পড়েছিল। তাদের যোগাযোগের সব পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই বাধাটা যদি বহাল থাকত, তাহলে বিয়েটাও হতো না, এখন দাম্পত্য কলহও হতো না। সেই বাধা কীভাবে ছুটেছে জানেন? বইয়ের কারণে। তারা বই আদান প্রদানের নামে বইয়ের ভিতরে চিঠি ঢুকিয়ে চিঠি আদান-প্রদান করতেন কি-না! আমার এক বড়ভাই বললেন, বইটা যখন প্রকাশ হয়, তখন সেটা মানুষের পরম বন্ু্ল হয়ে ওঠে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তবে প্রকাশ হওয়ার আগে কিন্তু এই বইয়ের কারণে বন্ু্লত্ব নষ্ট হতে পারে। আমি বললাম, কী রকম? বড়ভাই বললেন, কী রকম আবার। এক প্রকাশক আমার বই প্রকাশের নাম করে বিশ হাজার টাকা মেরে দিয়েছে। এক বইয়ের কারণে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক এমন জায়গায় গেছে যে, তাকে দেখলে হাতের কাছে যা পাই, তা নিয়েই দৌড়ানি দেব। হাতের কাছে কিছু না পেলে যে দৌড়ানি দেব না, এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই। খালি হাতেও কিন্তু দৌড়ানি দেওয়ার নিয়ম আছে। তবে বই পড়ার কারণেও দৌড়ানি খাওয়ার চল রয়েছে। যেনতেন বই পড়ে অবশ্য দৌড়ানি খাবেন না। দৌড়ানি খাওয়ার জন্য যোগ্য এই ধরনের বইকে বলে ‘আউট বই’। ‘আউট বই’ পড়ার আলাদা একটা স্টাইলও আছে। স্কুলের পাঠ্যবই খুলে তার মাঝে বসিয়ে, লুকিয়ে লুকিয়ে পড়া।
শিরোনাম
- আমার ছেলের খুনীর ফাঁসি যেন দেখে যেতে পারি: আবু সাঈদের বাবা
- দিল্লি বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫, গ্রেফতার আরও এক কাশ্মীরি
- মালয়েশিয়ায় শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সাইবারজায়া ইউনিভার্সিটি
- আফ্রিকার ছয় দেশে আছে রুশ সেনার উপস্থিতি: রাষ্ট্রীয় টিভি
- ‘খালেদা জিয়াকে দেশের সেরা জয় উপহার দিতে চাই’
- উইঘুর যোদ্ধাদের চীনের কাছে হস্তান্তর করবে সিরিয়া
- ‘একটি দল ক্ষমতায় যেতে প্রলাপ বকছে’
- সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাশে থাকবে চীন
- বগুড়ায় কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
- শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত
- মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিষয়ক সমন্বয় সভা
- আকাশ প্রতিরক্ষা ও যুদ্ধবিমান চুক্তি চূড়ান্ত করতে ফ্রান্সে জেলেনস্কি
- অস্ট্রেলিয়ায় বিএনপির জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন
- ভারতের চা, মশলা, আমসহ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করলেন ট্রাম্প
- নওগাঁর মান্দায় ধানের শীষে ডা. টিপুর নির্বাচনী পথসভা
- পাঙ্গাস পোনা শিকারের দায়ে জেলের কারাদণ্ড
- পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন কারাগারে
- রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
- নির্বাচনের আগেই হাসিনাকে দেশে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি সারজিসের
- কলাপাড়ায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৫ জন হাসপাতালে
বই নিয়ে হৈচৈ
আমার বোন আর দুলাভাই প্রেম করে বিয়ে করেছেন। তাদের কিন্তু প্রেম বাধা পড়েছিল। তাদের যোগাযোগের সব পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই বাধা কীভাবে ছুটেছে জানেন? বইয়ের কারণে। তারা বই আদান-প্রদানের নামে বইয়ের ভিতরে চিঠি ঢুকিয়ে চিঠি আদান-প্রদান করতেন কি-না...
ইকবাল খন্দকার
প্রিন্ট ভার্সন