শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ে সুরক্ষিত হচ্ছে পরিবেশ

রাশেদ খান, মাগুরা

প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ে সুরক্ষিত হচ্ছে পরিবেশ

পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বর্জ্যকে রিসাইক্লিং করে পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখছে মাগুরার ছয়টি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা। পাশাপাশি এসব কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। বিশেষ করে পাড়া-গাঁয়ের নারীদের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ছে। মানুষের বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও যত্রতত্র পড়ে থাকা পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সামগ্রী এসব কারখানায় এনে মেশিনের মাধ্যমে ছোট ছোট চিপস আকারে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। পরে তা সরবরাহ করা হয় ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব প্রক্রিয়াজাতকরণ চিপস রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে- এমনটি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রক্রিয়াজাতকৃত এসব চিপস দেশে-বিদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে নতুন প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাজে। অন্যদিকে এই ঘূর্ণায়মান ব্যবহারের ফলে জেলার মাটি, বায়ু ও জলমহালগুলো প্লাস্টিকের দূষণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে। সুরক্ষিত হচ্ছে পরিবেশ। মাগুরা জেলা সদরের কাশিনাথপুর, বড়খড়ি, পারনান্দুয়ালীতে গড়ে উঠেছে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতকরণের ছয়টি কারখানা। কারখানাগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকার সংগ্রহকারীরা মানুষের বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিত্যক্ত প্লাস্টিক বিভিন্ন মূল্যে ক্রয় করে পাইকারি দরে বিক্রি করছেন এসব প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায়। পরে সেগুলো এখানে প্রক্রিয়াজাত হওয়ার পর নির্দিষ্ট দামে সরবরাহ করা হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রক্রিয়াজাতকরণের পর প্রতি কেজি প্লাস্টিক গুড়া তথা চিপস প্রকারভেদে সর্বনিম্ন ১০, সর্বোচ্চ ৬০  টাকা দরে তারা ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করেন। মাগুরার প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কর্মরতরা জানিয়েছেন, এখানে কাজ করে তারা আর্থিকভাবে এখন অনেক সচ্ছল। ছয়টি কারখানায় অতি দরিদ্র পরিবারের অন্তত দুই শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। যাদের সিংহভাগ নারী।

ফোর স্টার রিসাইক্লিং কারখানা মালিক তাসলিমা সুলতানা জানিয়েছেন, প্রতিটি কারখানায় প্রতি মাসে গড়ে ১০ থেকে ১২ টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাত হয়। এগুলো এক সময় পরিবেশকে দূষিত করত। কারখানা হওয়ার পর পরিবেশ সুরক্ষায় এগুলো প্রক্রিয়াজাত হয়ে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী হওয়ায় পরিবেশ সুরক্ষিত হচ্ছে। রাইসা বেগম নামে একজন কারখানাকর্মী জানান, কারখানায় কাজ করে প্রতি মাসে তিনি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেতন পান। এতে তার সংসারে ফিরেছে সচ্ছলতা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি এ টি এম আনিসুর রহমান বলেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি এই কারখানাগুলো মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।’

সর্বশেষ খবর