পটুয়াখালীতে অ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি কাজের প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করে সফলতা পেয়েছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের উদ্যোক্তা মশিউর রহমান আসিফ। বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের নগরের হাট-বাজারে তার নিজস্ব ছোট্ট কারখানায় তৈরি হচ্ছে হাঁড়ি, পাতিল, কড়াই, কলস, সরা, গামলা, ছসপ্যান, বিভিন্ন সামগ্রীর ঢাকনাসহ গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হরেক রকম সামগ্রী। প্রতিমাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকার তৈরিকৃত সামগ্রী বাজারজাত করছেন আসিফ।
তার কারখানায় ১৫ জন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে এর চাহিদা ও ব্যাপকতা বাড়ছে। ফলে প্লাস্টিক ও দস্তার দৌড়ে পিছিয়ে থাকা অ্যালুমিনিয়াম শিল্প সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে।
সরকারি সহযোগিতা পেলে কাজের পরিধি আরও বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানান আসিফ।
কারিগর ও কর্মচারীসহ যাবতীয় খরচ মিটিয়ে লাভের মুখ দেখছেন তিনি। মাত্র এক বছরেই সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সাড়া ফেলেছেন।
নগরের হাট এলাকার মো. ফজলুর রহমান মৃধার ছেলে আসিফ।
উদ্যোক্তা আসিফ জানান, দুই বছর আগে নগরের হাট বাজারে ডিলারশিপ নিয়ে প্লাস্টিকের সামগ্রী বিক্রি করতেন তিনি। গ্রামাঞ্চলে সিলভারের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় আসিফ এক সিলভারের পণ্য ব্যবসায়ীর পরামর্শে প্লাস্টিকের ব্যবসা প্রায় গুটিয়ে ফেলেন। পরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে মেশিন সংগ্রহ করে নিজ বসতঘরে গড়েন কারখানা। ছোট বেলায় মা মারা যান। কারখানার নাম রাখেন মায়ের নামানুসারে ‘মেসার্স মমতাজ মেটাল’। ঢাকা ও খুলনা থেকে নিয়ে আসেন দক্ষ কারিগর। ঢাকার শ্যামপুর থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করেন আসিফ। ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু করেন গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত অ্যালুমিনিয়ামের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন। শুরুতে ব্যাংক লোনের ঝামেলা থাকলেও এ বছরে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মোট সাতটি মেশিন থাকলেও বর্তমানে ছয়টি মেশিন স্থাপন করে চলছে পণ্য তৈরির কাজ। মোট ১৫ জন নারী-পুরুষ দিয়ে চলে উৎপাদন। সব ব্যয় মিটিয়ে বর্তমানে তার মাসিক আয় প্রায় ২ লাখ টাকা। উৎপাদিত সামগ্রী জেলার বাউফল, কালাইয়া, পটুয়াখালী শহরের চকবাজার, পুরাতন ফেরিঘাট, নিউমার্কেট, বরগুনা জেলার আমতলী বাজারে সরবরাহ করা হয়। প্রতিমাসে অন্তত অর্ধকোটি টাকার সামগ্রীর চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে থাকেন। বর্তমানে অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যের বেশ চাহিদা থাকায় যুবকরা এগিয়ে আসলে দেশের অর্থ সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। পটুয়াখালী বিসিক শিল্প নগরীর ভারপ্রাপ্ত সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর সিকদার বলেন, এটি ভালো একটি উদ্যোগ। আমরা দ্রুত আসিফের কারখানা পরিদর্শন করব। তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার চেষ্টা করব।