পুরোপুরি দৃষ্টিহীন হয়েও মিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন জহুরুল ইসলাম মঙ্গল। মেরামত করেন পাওয়ার টিলার, শ্যালো, সাইকেল, কৃষি জমির স্প্রে মেশিনসহ নানা যন্ত্র। হাতের স্পর্শ ও চলমান যন্ত্রের শব্দ শুনেই বুঝতে পারেন সমস্যা। সে অনুযায়ী সমাধান করেন তিনি। তার কাজে সন্তুষ্ট এলাকার মানুষ। আশপাশের গ্রাম থেকেও কাজের জন্য নিয়ে আসে নষ্ট যন্ত্রপাতি। ‘মঙ্গল মিস্ত্রি’ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বুড়োপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সেখানে বাড়ির কাছেই রয়েছে তার ছোট কাঠের দোকান। বুড়োপাড়া গ্রামে সরেজমিন জানা যায়, মঙ্গল মিস্ত্রির বয়স ৫৯ বছর। জন্মের পর থেকেই তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত খুব সামান্যই দেখতে পেতেন। ৪০ বছর বয়সের পর থেকে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান তিনি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও কিশোর বয়সে কৃষি যন্ত্রপাতি মেরামতের কাজ শেখেন। একপর্যায়ে নিজেই একটি দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন। কিন্তু প্রায় ২০ বছর কোনো রকম চোখে না দেখে, শুধু নিজের স্মৃতিশক্তিকে কাজে লাগিয়ে মিস্ত্রির কাজ করে যাচ্ছেন। হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি দেওয়া বা রেঞ্জ ব্যবহার করে টাইট করেন নাট-বোলটু। যে আয় দিয়ে চালাচ্ছেন নিজের সংসার। মঙ্গল মিস্ত্রি জানান, ছোট থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও কারও মুখাপেক্ষী হতে চাননি তিনি। এ কারণে হাতের কাজ শিক্ষা নেন। অন্যান্য প্রতিবন্ধী বা অসহায় মানুষের মতো কারও সহযোগিতার আশায় বসে থাকেননি। সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস রেখে নিজেই আয়ের পথ খুঁজে নিয়েছেন। সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনযাপন করেন। কারও সাহায্য ছাড়াই করেন চলাফেরা। তিনি বলেন, ‘বাবা-মায়ের রক্তের গ্রুপ এক হওয়ায় আমি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্মেছি। আমার আরও তিনটি ভাই ছিল। জন্মের পর তারা সবাই মারা গেছে। একটি বোন আছে সেও পুরোপুরি সুস্থ না।’ স্থানীয়রা জানান, গ্রামে আরও কয়েকজন মিস্ত্রি আছে। কিন্তু দৃষ্টিহীন মঙ্গল মিস্ত্রির হাতের কাজ ভালো। এ কারণে বেশির ভাগ মানুষ যে কোনো যন্ত্রপাতি মেরামতের জন্য তার কাছে আসে। তিনি সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের মতোই কাজে পারদর্শী। অনেকে বলেন, মঙ্গল মিস্ত্রি যে কোনো যন্ত্র স্পর্শ করেই বুঝতে পারেন তার সমস্যা। সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেন। তা ছাড়া তিনি স্বল্প খরচেই সমস্যার সমাধান করে দেন। মঙ্গল মিস্ত্রির বয়স বাড়ছে। এ কারণে নিজের ছেলে বিকরামকে একই কাজের শিক্ষা দিচ্ছেন তার মেধা ও মনন দিয়ে। যাতে তার অবর্তমানে ছেলেই গ্রামের মানুষের কাজ করতে পারে। ছেলে বিকরাম বলেন, ‘আমি জ্ঞানবুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই দেখছি আমার বাবা অন্ধ। চোখে দেখেন না; কিন্তু মিস্ত্রির কাজ করেন। বাবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও বাবার কাছ থেকে এই কাজের শিক্ষা নিচ্ছি।’ মঙ্গল মিস্ত্রি জানান, তিনি হাতের কাজ করেই মানুষের মন জয় করেছেন। চোখের দৃষ্টি না থাকলেও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেই তিনি খুশি।
শিরোনাম
- শাহরুখের নামে দুবাইয়ে পাঁচতারা হোটেল
- ইবিতে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শিক্ষার্থী আটক, থানায় সোপর্দ
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৯২
- বিদেশি অপরাধী ঠেকাতে থাইল্যান্ডে ভিসা যাচাইয়ে নতুন কড়াকড়ি
- জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বলেশ্বর নদীতে নৌ-র্যালি
- আওয়ামী লীগের যেকোনো কর্মকাণ্ড অপরাধ বলে গণ্য হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল
- একাত্তরের মতো জুলাইকে নিয়ে একটা শ্রেণি ব্যবসা শুরু করেছে : শিবির সভাপতি
- আশুগঞ্জে ১২০ কেজি গাঁজাসহ পাচারকারী গ্রেফতার, পিকআপ জব্দ
- সাংবাদিকদের সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: মুন্সীগঞ্জে ফারুক ওয়াসিফ
- কোনো অপশক্তিই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না : আইজিপি
- পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৬ কর্মকর্তাকে রদবদল
- জনগণকে যারা বাদ দিয়েছে, তারাই আজ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন : খোকন
- রূপগঞ্জে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- লকডাউন আর বেহেশতের টিকিট বিলিকারীদের মধ্যে সম্পর্ক আছে : এ্যানী
- ৫০০ মিটার সেতুর অভাবে তিন জেলার মানুষের ভোগান্তি
- নির্বাচন ঘিরে ৯ দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’ চালু
- নোয়াখালীতে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা-র্যালি
- হুথিদের হামলা বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের
- নির্বাচিত সরকার ভোলার গ্যাস সমস্যার সমাধান করবে : শিল্প উপদেষ্টা
প্রকাশ:
০০:০০, শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
আপডেট:
০২:২৪, শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
দৃষ্টিহীন মঙ্গল মিস্ত্রির নিপুণ কাজ
জামান আখতার, চুয়াডাঙ্গা
প্রিন্ট ভার্সন
জন্ম থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলাম মঙ্গল। মেরামত করেন পাওয়ার টিলার, শ্যালো, সাইকেল, কৃষিজমির স্প্রে মেশিনসহ নানান যন্ত্র। হাতের স্পর্শ ও চলমান যন্ত্রের শব্দ শুনেই বুঝতে পারেন সমস্যা কোথায়; করেন তার সমাধান...
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর