পৃথিবীর সুরক্ষাবলয় হিসেবে পরিচিত ওজোন স্তর ধীরে ধীরে আগের অবস্থায় ফিরছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) প্রকাশিত ওজোন বুলেটিন ২০২৪–এ জানানো হয়েছে, চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ওজোন স্তর ১৯৮০–এর দশকের স্তরে পৌঁছাবে।
২০২৪ সালে অ্যান্টার্কটিকার ওজোন ছিদ্র অন্যান্য বছরের তুলনায় ছোট ছিল। ডব্লিউএমও জানায়, প্রাকৃতিক আবহাওয়াগত কারণে এ বছর ওজোন ক্ষয় কিছুটা কমেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি উন্নতি মূলত বৈশ্বিক উদ্যোগের সফলতার ফল।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় বিশ্ব ওজোন দিবসে। এ দিন একইসঙ্গে ভিয়েনা কনভেনশনের ৪০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়। ১৯৮৫ সালে এই কনভেনশন ও পরবর্তীতে মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হওয়ায় ওজোন স্তর রক্ষায় বিশ্বব্যাপী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, চল্লিশ বছর আগে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দিয়ে দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। আজ তার ফল মিলছে, ওজোন স্তর সুস্থ হয়ে উঠছে। এটি প্রমাণ করে, বিজ্ঞানকে গুরুত্ব দিলে বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
মন্ট্রিল প্রটোকলের মাধ্যমে রেফ্রিজারেশন, এয়ার কন্ডিশন, অগ্নিনির্বাপণ ফোম ও হেয়ার স্প্রে–তে ব্যবহৃত ওজোন ধ্বংসকারী ৯৯ শতাংশেরও বেশি রাসায়নিক পদার্থ বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে ত্বক ক্যানসার, চোখের ছানি (cataract) ও পরিবেশগত ক্ষতির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে।
ডব্লিউএমও মহাসচিব সেলেস্টে সাওলো জানান, এবারের বিশ্ব ওজোন দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল বিজ্ঞান থেকে বৈশ্বিক পদক্ষেপে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, বিজ্ঞানের পরামর্শে এগোলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়।
ডব্লিউএমওর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ম্যাট টুলি সতর্ক করে বলেন, কাজ এখনো শেষ হয়নি। ওজোন স্তর ও ওজোন ধ্বংসকারী পদার্থগুলোর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যেতে হবে।
২০২৪ সালে অ্যান্টার্কটিকার ওজোন ছিদ্র সর্বোচ্চ ৪৬.১ মিলিয়ন টন ঘাটতিতে পৌঁছায়, যা ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের তুলনায় ছোট। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের ধীর ক্ষয় এবং দ্রুত পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া প্রমাণ করছে যে ওজোন স্তরের পুনরুদ্ধার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল