শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফ্রান্সের নাটকীয় জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফ্রান্সের নাটকীয় জয়

আলবেনিয়ার প্রতিরোধ ভেঙে প্রান্তকে অসাধারণ জয় উপহার দেওয়ার অন্যতম নায়ক দিমিত্রি পায়েতকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস —এএফপি

প্রথমবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ খেলছে আলবেনিয়া। ইউরোপের ছোট্ট দেশটি প্রথম আসরটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিল ফ্রান্স, রুমানিয়া ও সুইজারল্যান্ডের যে কোনো একটি দলকে হারিয়ে। র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থেকেও গ্রুপ পর্বে গতিশীল ফুটবল খেলেছে। বুধবার রাতে স্বাগতিক ফ্রান্সের বিপক্ষে দুর্দমনীয় ফুটবল খেলে লড়াই করেছে শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্য সঙ্গী হওয়ায় ২-০ গোলে হেরে যায় স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে। রুমানিয়াকে অতিরিক্ত সময়ের গোলে হারানোর পর আলবেনিয়াকে একইভাবে হারিয়েছে ২০০০ ও ১৯৮৪ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। অতিরিক্ত সময়ের গোলে টানা দুই ম্যাচ জিতে প্রথম দল হিসেবে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা ১৬ তে জায়গা নিয়েছে দিদিয়ের দেশচ্যাম্পের ফ্রান্স।

রুমানিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ যখন ড্রয়ের পথে এগোচ্ছিল, তখনই সবাইকে চমকে জয়সূচক গোলটি করেন দিমিত্রি পায়েত। বুধবার রাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেন ইংলিশ প্রিমিয়ার দল ওয়েস্টহাম ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার পায়েত। অবশ্য পায়েতের গোলের আগেই অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের পক্ষে দুর্দান্ত মৌসুম কাটানো আতোয়ান গ্রিজম্যান আলবেনিয়ার প্রতিরোধ ভেঙে দেন অসাধারণ এক হেডে। গ্রিজম্যান গোল দেন ৯০ মিনিটে এবং পায়েত গোলটি করেন ৯৫ মিনিটে। দুই ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে গোল করে ‘এক্সট্রা টাইম স্কোরিং’ স্পেশালিস্টের তকমা পড়ে নিল ফ্রান্স।

ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখার টার্গেট আলবেনিয়ার। বিপরীতে প্রথম দল হিসেবে শেষ ষোলতে ওঠার টার্গেট ফরাসিদের। মার্শেইতে এমন সমীকরণের ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিট ছিল প্রাণহীন, ম্যাড়ম্যাড়ে। আক্রমণগুলো ছিল ছন্নছাড়া ও গতিহীন। ২১ মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় স্বাগতিকরা। প্রথম সুযোগ সৃষ্টি করেন গ্রিজম্যানের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পাওয়া ম্যান ইউর স্ট্রাইকার অ্যান্তনি মার্শিয়াল। পায়েতের বাড়ানো বল ডি বক্সে পেয়েও শট নিতে পারেননি মার্শিয়াল। ফলে গোলের দেখা পায়নি ফ্রান্স। প্রথমার্ধে আরও চার-চারটি আক্রমণ করেছে দুই দল। কিন্তু গোল হওয়ার মতো আক্রমণ ছিল না। ফলে গোলশুন্যভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধে ফরাসি কোচ দেশচ্যাম্প বদল আনেন একাদশে। ম্যান ইউর স্ট্রাইকার মার্শিয়ালকে বসিয়ে মাঠে নামান দলের সেরা মিডফিল্ডার পল পগবাকে। পগবা মাঠে নামতেই পাল্টে যায় খেলার চিত্র। ৪৭ মিনিটে নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হয় দেশচ্যাম্পবাহিনী। কিংসলে কোম্যানের হেড সামান্যের জন্য গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৫৩ মিনিটে গগবার হাফ ভলি ক্রসবারের সামান্য উপর দিয়ে গিয়ে হতাশ করে ফ্রান্সকে। এর মধ্যে ৫১ মিনিটে বেঁচে যায় স্বাগতিকরা। দুর্ভাগ্য সঙ্গী থাকায় নিশ্চিত গোলবঞ্চিত হয় আলবেনিয়া। মিডফিল্ডার  লেদিয়ান মেমুসাইয়ের শট গোলরক্ষককে পরাস্থ করলেও সাইড বারে লাগায় গোল বঞ্চিত হয় ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো খেলতে আসা আলবেনিয়া। এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে ম্যাচ। খেলায় তখন শেষ বাঁশির অপেক্ষা। তখনই বদলি হিসেবে খেলতে নামা গ্রিজম্যান প্রতিরোধ ভেঙে দেন চমৎকার এক হেডে গোল করে। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আদিল রামির ক্রসে দুর্দান্ত হেডে দলকে এগিয়ে নেন গ্রিজমান (১-০)। ওই গোলের পর আরও ৫ মিনিট অতিরিক্ত সময় বাড়ানো হয়।  বল জালে ঢোকা দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের। যোগ হওয়া অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে পেড়েকটি ঠুকে দেন পায়েত (২-০)। ডান পায়ের প্লেসিং শটে গোলটি করে ফ্রান্সকে সেরা ১৬তে ঠাঁই দেন পায়েত।  টানা দুই জয়ে ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপে সবার ওপরে এখন ফ্রান্স। গ্রুপের আরেক ম্যাচে ১-১ গোলে অমীমাংসিতভাবে শেষ হয় সুইজারল্যান্ড-রুমানিয়া ম্যাচ। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর