বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মোহামেডানকে উড়িয়ে দিল আবাহনী

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মোহামেডানকে উড়িয়ে দিল আবাহনী

মোহামেডানের জালে বল। তাই উৎসবে মেতেছেন আবাহনীর ফুটবলাররা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের দুই প্রভাবশালী ক্লাব আবাহনী ও মোহামেডান গতকাল মুখোমুখি হয়েছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। অথচ স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া কোনো পথিকের বুঝার উপায় ছিল না, দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ হচ্ছে মাঠে। অবাক লাগার বিষয়। আশি-নব্বই দশকে দুই দলের ফুটবল ম্যাচ নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে থাকত উত্তেজনা। এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করতেন ফুটবলপ্রেমীরা। সারা দেশ ছেয়ে যেত আকাশী-নীল ও সাদা-কালো পতাকায়। খেলার দিন সকাল থেকেই গমগম করত স্টেডিয়াম পাড়া। অফিস আদালত সকালের পর হালকা হয়ে যেত। ঢাকাবাসীর সব রাস্তা তখন মিলত বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এসে। আজ সেসব ঠাঁই পেয়েছে স্মৃতির খাতায়। গতকাল দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী মুখোমুখি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু মাঠে উপস্থিত ছিলেন সাকল্যে হাজার তিনেক দর্শক! ভাবা যায়! এখন এটাই বাস্তবতা। এটাই সত্য। এমন কষ্টের ম্যাচে আবাহনী ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে। আবাহনীর জয়ের তিন নায়ক হেমন্ত ভিনসেন্ট, সানডে চিজোবা ও লি টাক। এই জয়ে ৭ ম্যাচে আবাহনী ১৫ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ঠাঁই নিয়েছে। শেখ জামালের পয়েন্টও ১৫। মোহামেডানের পয়েন্ট ৭ ম্যাচে মাত্র ৫।           

দুই দলের ম্যাচ বলে যে উত্তেজনা, যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকা দরকার, তার ছিটেফোঁটাও ছিল না গতকাল। প্রথমার্ধে আবাহনী খেলেছে একচেটিয়া দ্বিতীয়ার্ধে খেলেছে মতিঝিল পাড়ার দল মোহামেডান। তবে গোলের দেখা পায়নি সাদা-কালোর শিবির। বরং আবাহনী দুই অর্ধে তিন গোল করে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ধানমন্ডি পাড়ার দলটি এগিয়ে যায় ২৭ মিনিটে। অথচ গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল ১৮ মিনিটে। ডান প্রান্ত থেকে লি টাকের মাটি কামড়ানো ক্রসে হেমন্ত ডান পায়ে শট নেন। ১০ গজ দূর থেকে হেমন্তের শট দারুণভাবে ঠেঁকিয়ে দলকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে বাঁচান মোহামেডানের গোলরক্ষক নেহাল। ২৭ মিনিটে আর রক্ষা করতে পারেননি নেহাল। লি টাকের চমৎকার পাস  ধরে হেমন্ত ভিনসেন্ট ডানদিক থেকে কোনাকোনি শটে নেহালকে বোকা বানিয়ে জালে পাঠান (১-০)। হেমন্ত যখন শটটি নেন, তখন তার গায়ে গা লাগিয়ে দৌড়াচ্ছিলেন মোহামেডানের এক ডিফেন্ডার। ৩৪ মিনিটে সমতা আনার সুযোগ পেয়েছিল মোহামেডান। ডি বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে সজীবের দুর্দান্ত ফ্রি কিক বাঁক খেয়ে বার পোষ্টের সামান্য ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। প্রথমার্ধে ওই এক গোলেই বিরতির বাঁশি বাজে।

দ্বিতীয়ার্ধে মোহামেডান মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ম্যাচে ফিরতে। আক্রমণের পর আক্রমণ চালাতে থাকে মতিঝিল পাড়ার দলটি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো আরও দুই গোল খেয়ে বসে। ৭৭ মিনিটে দ্বিতীয় গোল প্রায় দিয়েই ফেলেছিল আবাহনী। বাঁ প্রান্ত থেকে জুয়েল রানার কাট ব্যাকে প্লেসিং শট নেন সানডে চিজোবা। বল দারুণভাবে রক্ষা করেন গোলরক্ষক নেহাল। ৮৮ মিনিটে ম্যাচের বিপরীতে গোল করে বসেন সানডে। শাহেদের বাড়ানো বল ধরে সানডে ডান দিক দিয়ে চমৎকারভাবে গোল করেন (২-০)। ওই গোলের পরপরই আবাহনীর জয় নিশ্চিত হয়ে পড়ে। তিন মিনিটের অতিরিক্ত সময়ে আরও একটি গোল করে আবাহনী। সানডে ও লি টাকের চমৎকার বোঝাপড়ায় ম্যাচের তৃতীয় গোল পায় আবাহনী। বক্সের মাথা থেকে সানডে ডিফেন্স চেড়া বল দেন লি টাককে। লি টাক ঠাণ্ডা মাথায় ডান পায়ের টোকায় নেহালের মাথার ওপর দিয়ে তৃতীয় গোল করেন (৩-০)।

সর্বশেষ খবর