মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফ্রান্সের কাছে ১৪ বছর ‘অজেয়’ বেলজিয়াম

মেজবাহ্-উল-হক

ফ্রান্সের কাছে ১৪ বছর ‘অজেয়’ বেলজিয়াম

‘আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল’ কিংবা ক্রিকেটে ‘ভারত-পাকিস্তান’-এর মতো ক্রীড়া বিশ্বে ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে পরিচিত নয় ইউরোপের দুই প্রতিবেশী দেশ ‘ফ্রান্স-বেলজিয়াম’। কিন্তু ফুটবলে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিশ্বকাপেরও অনেক আগে থেকে। ফ্রান্স-বেলজিয়াম প্রথম ফুটবল ম্যাচ খেলেছিল ১৯০৪ সালে, বিশ্বকাপ তো শুরু ১৯৩০ সালে।

আয়তনে বেলজিয়ামের চেয়ে ২১ গুণ বড় ফ্রান্স। কিন্তু ফুটবল শক্তিতে ফরাসিদের চেয়ে এগিয়ে বেলজিয়ানরাই। দুই দেশের ১১৪ বছরের ফুটবল লড়াইয়ে ৩০ বার জিতেছে বেলজিয়াম, ফ্রান্স জেতে ২৪ বার, ১৯ ম্যাচ ড্র হয়েছে। সবশেষ ১৪ বছরে একবারও বেলজিয়ামকে হারাতে পারেনি ফরাসিরা।

সবশেষে ২০১৫ সালে প্রীতি ম্যাচে এই ফ্রান্সকে প্যারিসে গিয়ে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে বেলজিয়াম। ফ্রান্স তাদের প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে সবশেষ জয় পেয়েছিল ২০০৪ সালে। তবে বিশ্বকাপে দুই প্রতিবেশী দেশের সবশেষ দেখা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। যে ম্যাচে বেলজিয়ামকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দেয় ফ্রান্স। বিশ্বকাপে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল ১৯৩৮ সালে। সে ম্যাচেও জিতেছিল ফরাসিরা। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে মাত্র একবারই ফ্রান্সকে হারিয়েছিল বেলজিয়াম, ১৯৮২ সালে।

১৯০৪ সালে দুই প্রতিবেশী দেশের প্রথম দেখায় ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে ফ্রান্সকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বেলজিয়াম। তবে দুই দেশের লড়াইটা সব সময়ই বেশ জমে উঠত। বেলজিয়াম-ফ্রান্সের লড়াইটা অন্যরকম। এক দশম ফ্রান্স ভালো খেলে তো আরেক দশক বেলজিয়াম। এভাবেই কেটে গেছে এক শতাব্দী।

জিনেদিন জিদানের জাদুকরী ফুটবলে ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স। কিন্তু বিশ্বকাপটা এখনো অধরা বেলজিয়ানদের কাছে। তবে এবার সোনালি ট্রফিটা জয়ের দারুণ সুযোগ এসেছে তাদের সামনে। লুকাকু, হ্যাজার্ড, ফেলাইনির মতো তারকা ফুটবলারও রয়েছেন। কিন্তু তাদের সামনে বাধা প্রতিবেশী ফ্রান্স। সেমিফাইনালে এই বাধা কি পার হতে পারবে বেলজিয়াম?

ফ্রান্সের সামনেও বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের খুবই ভালো সুযোগ। ফরাসি দলেও তারকার ছড়াছড়ি। গ্রিজম্যান, এমবাপ্পে, পল পগবার মতো ফুটবলার রয়েছেন। তারুণ্যে ভরপুর দলটা দারুণ উজ্জীবিত। তারা নকআউটের দুই ম্যাচে দুই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়েকে বিদায় করে দিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে।

বেলজিয়ামও নকআউটের দুই ম্যাচে তাদের সামর্থ্যের পরীক্ষা দিয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে বিদায় করে দিয়েছে। তবে বেলজিয়ামের দাপট ছিল নকআউটের প্রথম ম্যাচে। এশিয়ার ফুটবলশক্তি জাপানের বিরুদ্ধে তারা ২ গোলে পিছিয়ে পড়েও শেষ ২০ মিনিটে ৩ গোল করে জিতেছে। ওই ম্যাচটি তাদের মানসিকভাবে অনেক চাঙা করেছে।

ফ্রান্স-বেলজিয়াম ম্যাচে কে এগিয়ে আর কে পিছিয়ে বলা কঠিন। কেননা বিশ্বকাপের আগে থেকেই দুই দল ছিল ‘হট ফেবারিট’। খেলছেও ফেবারিটের মতোই। দুই দলই ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছে। ভক্তদের জন্য বেদনার বিষয় হচ্ছে— দুই ফেবারিটের মধ্যে এক দলকে আজ বাদ পড়তে হবে। কিন্তু কে— ‘ফ্রান্স নাকি বেলজিয়াম’ বাদ পড়ছে তা দেখার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব।

সর্বশেষ খবর