ক্লাব ফুটবল তো বটেই, জাতীয় দলের খেলাগুলো থেকেও দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। ঢাকার মাঠে যেন ফুটবল নিয়ে কোনো আগ্রহই আর নেই! এই অবস্থা বছরের পর বছর ধরে চলল। তারপর হঠাৎ করেই যেন বদলে গেল সব। রাতারাতি দর্শকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। টিকিট সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে সবাই। সাফ সুজুকি কাপে ভুটানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই দর্শকদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি চোখে পড়েছিল। সেই ম্যাচ জয়ের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে দর্শকদের উপস্থিতি বেড়ে যায় বহুগুণে। দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দেখা যায় দর্শকের ঢল। টানা দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ ফুটবল দল এবার দর্শকদের স্বপ্ন অনেক বড় করে দিয়েছে। আজও তারা মাঠে যাবে একটা জয় দেখার আশা নিয়ে। বাংলাদেশ সাফ সুজুকি কাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে নেপালের। ড্র করলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমীকরণ নিয়ে মাঠে নামবে কোচ জেমি ডের শিষ্যরা।
কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী কোচ জেমি ডে। সাফ সুজুকি কাপ শুরু হওয়ার আগেই বলেছিলেন, ম্যাচ বাই ম্যাচ জয় করেই এগিয়ে যেতে চান তিনি। আর চূড়ান্ত লক্ষ্যটা যে সাফের ট্রফি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গতকালও তিনি সতর্ক হয়েই কথা বললেন। ভুটান ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেও মাটিতে পা রেখেই এগিয়ে যাওয়ার উপদেশ দিচ্ছেন কোচ। তিনি বলেছেন, ‘এক-দুটি ম্যাচ জেতা আমাদের লক্ষ্য নয়। অনেক দূর যেতে চাই আমরা।’ সেই দূরের লক্ষ্যটা আপাতত সাফ ট্রফি। ২০০৩ সালের পর আর সাফ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৯ সালের পর তো আর সেমিফাইনালটাই খেলতে পারেনি লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। সেবার ঢাকার মাঠেই সেমিফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। আবার ঢাকার মাঠেই ভাগ্য ফিরে পেল তারা। দীর্ঘ ৯ বছর পর সেমিফাইনাল খেলার যোগ্যতা প্রায় অর্জন করেই নিয়েছে বাংলাদেশ। আজ ড্র করলেই হবে। অবশ্য কিছুটা ভয়ও রয়েছে। নেপালের কাছে ২-০ গোলে হেরে গেলে অন্যদিকে ভুটানকে ২-০ গোলে পাকিস্তান হারালে বাংলাদেশ আবারও গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে যাবে! তখন বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপালের সংগ্রহ দাঁড়াবে ৬ পয়েন্ট করে। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকবে নেপাল (+৫) ও পাকিস্তান (+২)। বাংলাদেশের গোল ব্যবধান দাঁড়াবে +১। এ কারণেই আজ অন্তত ড্র পেতেই হবে বাংলাদেশের। পরাজিত হলেই শঙ্কায় পড়ে যাবে জেমি ডের শিষ্যরা।