মঙ্গলবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ওয়ারী আসছে নতুন রূপে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ওয়ারী আসছে নতুন রূপে

ক্রীড়াঙ্গনে ঐতিহ্যবাহী ওয়ারী ক্লাবকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। অথচ দেশের এই প্রাচীনতম দলটি এক সময়ে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি এই বড় তিন খেলা ছাড়াও ভলিবল, টেবিল টেনিসে শক্তিশালী দল গড়তো। সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ও স্বাধীনতার পরও ওয়ারীর পরিচয় ছিল সবচেয়ে আধুনিক ক্লাব নামেই। দক্ষ সংগঠকদের পরিচালনায় এই ক্লাবের পরিবেশ ছিল চোখে পড়ার মতো। ওয়ারী ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম ছিলেন বাফুফের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।

১৮৯৮ সালে ওয়ারী ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্ন থেকে এই ক্লাবের গঠনতন্ত্রে আছে যিনি ঢাকার জেলা প্রশাসক অর্থাৎ ডিসি হবেন তিনিই ক্লাবের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতির দায়িত্ব পাবেন। শত বছর পেরিয়ে গেলেও সেই নিয়ম এখনো অটুট রয়েছে। বর্তমান ঢাকার ডিসিই আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান হচ্ছেন ওয়ারী ক্লাবের সভাপতি। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন অভিজ্ঞ সংগঠক এটিএম শামসুল আলম আনু। পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে এই ক্লাবের সঙ্গে জড়িত তিনি। ক্লাবের অনেক সুখ-দুঃখের সঙ্গী আনু।

ভলিবলে সর্বোচ্চ লিগ জেতার রেকর্ড ওয়ারী ক্লাবের। পাকিস্তান আমল ও স্বাধীনতার পর হকিতেও শিরোপা জয়ের রেকর্ড রয়েছে। ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন না হলেও রানার্স আপের গৌরব আছে। ফুটবলে বড় কোনো সাফল্য না থাকলেও বড় ভূমিকা আছে ক্লাবটির। ঢাকা ফুটবল ও হকি লিগ শুরুর পেছনে ওয়ারীর অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আবুল হাশেমের উদ্যোগে ১৯৭২ সালেই প্রথম বিভাগ লিগ মাঠে গড়ায়। ১৯৭৩ সালে হকি লিগ মাঠে গড়ায় এই ক্লাবের কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টায়।

ঢাকার সবচেয়ে প্রাচীনতম ক্লাব। ক্রীড়াঙ্গনে সুপরিচিত দল সেই ওয়ারীর ক্লাবের ঐতিহ্য ম্লান হতে চলেছিল। বিশেষ করে ফুটবল ও ক্রিকেটে যেন তাদের অবস্থান একেবারে নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। আশার কথা নতুন কমিটি গঠনের পর ওয়ারী জ্বলে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক আনুই জানালেন ‘আমরা ক্লাবের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চাই। সেই লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। যুগ্ম সম্পাদক মহিদুর রহমান মিরাজ বলেন, ‘যে কোনো কারণে হোক দীর্ঘদিন ওয়ারীর কর্মকা  স্থবির হয়ে পড়ে। এবার আমরা অতীত ভুলে নতুন বা চেনা রূপে ফেরার অঙ্গীকার করেছি।’ পেশাদার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে এবার ফিরে আসছে ওয়ারী। মিরাজ জানালেন, ‘আমাদের লক্ষ্য পেশাদার লিগ খেলা। তবে সময়ের স্বল্পতার কারণে এবার চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে শক্তিশালী দল গড়া হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু আগামীতে আমরা বিগ বাজেটে দল গড়বো। ভালো দল গড়তে যা যা প্রয়োজন আমরা সব পরিকল্পনা করে রেখেছি। আমার বিশ্বাস এই বছর না হলেও সামনের মৌসুমে ফুটবলে নতুন এক ওয়ারীর দেখা মিলবে। শিরোপা না জিতুক। ফুটবলে অনেক তারকার ক্যারিয়ার শুরু ওয়ারী থেকেই। এর মধ্যে অন্যতম নাম কাজী সালাউদ্দিন, মনোয়ার হোসেন নান্নু, শামসুল আলম মঞ্জু, বাটুসহ আরও অনেকে। ক্রিকেট আর হকিতেও কম তারকা খেলোয়াড় বের হয়নি ওয়ারী থেকে। ১৯৭৮ সালে ফুটবলে ওয়ারীর নাম বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে ক্রীড়ামোদীদের মনে। সেবার তারা প্রথম বিভাগ লিগে দুই পর্বের ম্যাচে তারকানির্ভর আবাহনীকে পরাজিত করে। সেই থেকে ওয়ারী আইল, ওয়ারী আইল চিৎকারটি স্লোগানে পরিণত হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর