শনিবার, ১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা
কাল প্রোটিয়াদের মুখোমুখি টাইগাররা

ফাফের হুঙ্কার এবং বাংলাদেশ

মেজবাহ্-উল-হক, লন্ডন থেকে

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ধসিয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের পেসার জোফরা আর্চার। দ্বিতীয় ম্যাচে কাল নটিংহামে পাকিস্তানের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার ওশেন থমাস। বাংলাদেশ দলে কে এই ‘এক্স-ফেক্টর’ এর ভূমিকা পালন করবেন?

কাল ওভালে প্রশ্নটা শুনে সঙ্গে সঙ্গে বোলিং উপদেষ্টা কোর্টনি ওয়ালশ বললেন, ‘না, বলা যাবে না! এটা আমাদের গোপন অস্ত্র! প্রতিপক্ষকে আমরা এটা জানাতে চাই না। কারণ তখন সে প্রতিপক্ষের টার্গেটে পরিণত হবে। আমাদের দলে বেশ কয়েকজন প্লেয়ার আছে, যারা এই কন্ডিশনে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে।’

সংবাদ সম্মেলনে টিমের পরিকল্পনা সম্পর্কে যে উইন্ডিজ কিংবদন্তি বলবেন না সেটাই স্বাভাবিক! কিন্তু সত্যিই কি বাংলাদেশ দলে ‘এক্স-ফেক্টর’ হওয়ার মতো কোনো বোলার আছে?

ইংল্যান্ডের উইকেট রানে ভরা। এখানে প্রথমে ব্যাট করে তিনশ পার করতে না পারলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলাই কঠিন। কিন্তু ‘এক্স-ফেক্টর’ কেউ হতে পারলে তো কথাই নেই। জয়ের রাস্তাটা পরিষ্কার হয়ে যায়। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচেই তা দেখা গেছে। পাকিস্তানকে মাত্র ১০৪ রানে প্যাকেট করে দিয়েছিল উইন্ডজ। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুন্ডটে ব্যাটিং লাইনআপ ইংল্যান্ডের কাছে আটকে গেছে ২০৪ রানে।

ইংল্যান্ডের উইকেট ব্যাটিং স্বর্গ হলেও আবহাওয়া দারুণ পেস উপযোগী। রোদ না থাকলে পেসাররা বাড়ুতি সুবিধা পেয়ে থাকেন। এখানে স্পিনারদের করণীয় খুব বেশি কিছু নেই। তবে দলের পেসারদের যথাযথ সহযোগিতা করতে হবে নিশ্চয়। তাই আক্রমণাত্মক না হয়ে রান আটকে দেওয়ার দিকেই মনোযোগী হতে হবে। প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে সে কাজটিই করতে পারেননি স্পিনাররা।

তবে পেসারদের নিয়ে সন্তুষ্ট কোর্টনি ওয়ালশ। আর উইন্ডিজ কিংবদন্তির বাজি কিংবা ‘এক্স-ফেক্টর’ যে মুস্তাফিজুর রহমান তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আগের ম্যাচে দারুণ বোলিং করেছেন। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেও কাটার মাস্টারের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ। ওয়ালশ বলেন, ‘ফিজ খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি। সে বেশ ভালো ছন্দেই আছে। অনেকেই মনে করে মুস্তাফিজ আর আগের মতো ছন্দে ফিরতে পারবে না। কিন্তু আমি এটা বিশ্বাস করি না। যে কোনো মানুষের ভালো-মন্দ সময় যেতেই পারে। আমরা যদি তাকে ৯০ কিংবা ৯৫ শতাংশ ফিটও রাখতে পারি এবং সে যদি নিজের নৈপুণ্য দেখাতে পারে সেটা বিশ্বকাপের জন্য কিংবা বাংলাদেশের জন্য অনেক ভালো কিছু হবে। দিন দিন সে ভালো করছে। আমি তাকে নিয়ে আশাবাদী।’

কাল তিন পেসার নিয়ে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ এবং মাশরাফি তো থাকছেনই, তৃতীয় পেসারটি কে? মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নাকি রুবেল হোসেন? এখানেও আবার কথা থাকছে! সাইফউদ্দিন রক্ষণাত্মক, রুবেল আক্রমণাত্মক! তবে যেহেতু ব্যাটিংয়ের বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে, তাই সাইফউদ্দিনকেই প্রথম পছন্দ। ওয়ালশ বলেন, ‘দুজনের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া কঠিন। যদি সাইফউদ্দিন ইনজুরিতে পড়ে সেক্ষেত্রে রুবেলের সামনে সুযোগ আসবে। তবে এটা আমার চিন্তার বিষয় নয়। এ নিয়ে নির্বাচকরা ভাবছেন।’

প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বাংলাদেশ। কারণ প্রথম ম্যাচে ভালো করলে যে টুর্নামেন্টেই অন্য চেহেরায় দেখা যেতে পারেন টাইগারদের। তবে প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর প্রোটিয়ারা কি ছেড়ে কথা বলবে?

দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস বলেছেন, ‘তুমি কীভাবে শুরু করেছ, সেটা বড়ু কথা নয়! তুমি কীভাবে শেষ করেছ সেটাই আসল!’ ইংলিশদের বিরুদ্ধে হারলেও দক্ষিণ আফ্রিকা যে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে সে ইঙ্গিতই দিয়েছেন প্রোটিয়া ক্যাপ্টেন।

ফাফের এই কথা বাংলাদেশের জন্য হুঙ্কারস্বরূপ! কিন্তু হুঙ্কারের জবাব যে হুঙ্কার দিয়ে দিতে হবে এমন নয়! অনেক কৌশলী হতে হয়। নিজের চেয়ে শক্তিধরকে আটকাতে মাথা খাঁটাতে হয়। দেখা যাক, দক্ষিণ আফ্রিকাকে আটকাতে কী ‘চক্রব্যূহ’ তৈরি করে রেখেছেন কোচ স্টিভ রোডস!

সর্বশেষ খবর