সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

এমন হার কল্পনাও করিনি

এমন হার কল্পনাও করিনি

এমন সুবিধাজনক অবস্থায় থেকে হেরে যাবে বাংলাদেশ, কল্পনাও করিনি। তারপরও মেনে নিয়েছি। মেনে নিয়েই বলছি, দারুণ ক্রিকেট খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন কাইলি মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বোনার। তারা যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, এক কথায় অবিশ্বাস্য।  

আমাদের তিন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম ইসলাম ভালো বোলিং করেছেন। কিন্তু কোথায় যেন একটু ঘাটতি ছিল। সত্যি বলতে, আমার কাছে বোলিংয়ের সময় সাকিবের অভাব অনুভূত হয়েছে পুরোপুরি। তার অভাব অন্য বোলাররা পূরণ করতে পারেননি। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরাও অনেকটা নির্ভার হয়ে ব্যাটিং করেছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হার একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছে, সাকিব ছাড়া প্রতিপক্ষকে দুই ইনিংসে অলআউট করে ম্যাচ জেতানো বোলার নেই আমাদের। তারপরও এদের নিয়েই খেলতে হবে। এজন্য টিম ম্যানেজমেন্টকে আত্মবিশ্বাস জোগাতে হবে এবং সঠিক পরিকল্পনা কষে দিতে হবে বোলারদের।

চতুর্থ ইনিংসে ৩৯৫ রান টপকে ম্যাচ জেতা কিন্তু সাধারণ কথা নয়। এ জন্য দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে হবে। সেই কাজটিই করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের বোলারদের সব চাপ সামলে যেভাবে ম্যাচ জিতেছে, তাতে অভিনন্দন পেতেই পারে ক্যারিবীয়রা। চতুর্থ দিন বোনার ও মেয়ার্স যখন ব্যাট করছিলেন, তখনই আমার মনে হয়েছিল মুমিনুলদের জয় পাওয়া সহজ হবে না। আমাদের স্পিনারদের বিপক্ষে দুজন খুবই সাবলীল ব্যাটিং করেছেন। অথচ দুজনেই প্রথম টেস্ট খেলেছেন। দুজনের জুটিটাই আসলে ম্যাচ জিতিয়েছে। মেয়ার্সকে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া মনে হয়েছে আমার। চাপের মুখে কী অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন তিনি। চতুর্থ ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করা সহজ কথা নয়। সেই কাজটিই করেছেন। তাকে আমার টুপি খোলা অভিনন্দন। ইতিহাস বলে, আমাদের হৃদয় ভাঙার এমন ঘটনা অনেক রয়েছে। এই চট্টগ্রামেই ২০০৮ সালে ড্যানিয়েল ভেট্টরির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৩১৭ রান টপকে ম্যাচ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। ২০০৩ সালে মুলতানে ইনজামাম-উল হক অবিশ্বাস্য এক সেঞ্চুরি করে জিতিয়েছিলেন পাকিস্তানকে। 

উইকেট নিয়ে টাইগার স্পিনারদের রিডিং ছিল খুব বাজে। সবাই ধারণা করেছিল উইকেটের আচরণ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জেতা টেস্টের মতো হবে। কিন্তু উইকেট ছিল খুবই ভালো। টার্ন ছিল, বল নিচুও হচ্ছিল। কিন্তু ততটা দুর্বোধ্য ছিল না। এমন উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হয়. সেই কাজটি করতে পারেননি স্পিনাররা। অথচ মেয়ার্স, বোনার ও সিলভা দারুণ ব্যাটিং করেছেন। তারা স্পিনারদের টার্ন সামলেছেন দারুণভাবে। 

মেয়ার্স ও বোনার যখন বড় জুটি গড়ছিলেন, তখন চার বোলারের বাইরে নাজমুল কিংবা অধিনায়ক নিজেও বোলিং করতে পারতেন। কেন করলেন না, বুঝতে পারছি না। নতুন বোলারের বিপক্ষে ব্যাটিং করলে মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটত। সেটা করতে পারেননি মুমিনুল। তবে ৩৯৫ রানের টার্গেট দেওয়া ঠিক ছিল।

ঘরের মাঠের সুবিধাটুকু কাজে লাগাতে পারেনি বলে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম জয়টি পায়নি। অবশ্য এখনো জয়ের সুযোগ রয়েছে। ১১-১৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট জিততেই হবে টাইগারদের। সাকিববিহীন কাজটি কঠিন হবে। জানি না কে কী ভাববেন, তবুও বলছি জাতীয় দলে সাকিবের বিকল্প নেই। চট্টগ্রামে জেতা ম্যাচ হেরেছে। এমন হার আমি কল্পনাও করিনি। টিভিতে হারের দৃশ্য দেখে আমি কিছুক্ষণ নীরব ছিলাম। আরেকটি কথা না বললেই নয়, মুমিনুল ব্যাটসম্যান হিসেবে সফল হলেও টেস্টে অধিনায়কত্ব করার মতো তার অভিজ্ঞতা হয়নি। নেতৃত্বে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তারপরও চেয়ে থাকব ঢাকা টেস্টের দিকে। সিরিজটা অন্তত ড্র হোক এ প্রত্যাশাই করব।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর