রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

টাইগারদের হতাশার একদিন

আসিফ ইকবাল

টাইগারদের হতাশার একদিন

গোটা দিনে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা একটি সুযোগও দেননি, এমন নয়। তৃতীয় সেসনে দিমুথ কারুণারত্নে একটি সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু লিটন দাস ক্যাচটি নিতে পারেননি। তাসকিনের বল কারুণারত্নের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল, লিটন ঝাপিয়েও ধরতে পারেননি। ক্যাচ মিস আবার লঙ্কান অধিনায়কের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনে। জীবন পেয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন কারুণারত্নে। দিন শেষে লঙ্কান অধিনায়ক অপরাজিত রয়েছেন ২৩৪ রানে।

অধিনায়কের সঙ্গে ১৫৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। দুই স্বাগতিক ব্যাটসম্যান আকাশসম দৃঢ়তায় ব্যাটিং করে পার করেছেন পুরো দিন। তাদের জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৫১২ রান। বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে মাত্র ২৯ রান। সাদা চোখে ম্যাচটির ভবিষ্যৎ ড্র। ফল যাই  হোক চতুর্থদিন একটি রেকর্ডও গড়েছে স্বাগতিক দল। উইকেট না হারিয়ে ফিরে গেছে সাজঘরে। কারুণারত্নে ও ধনাঞ্জয়ার দৃঢ়তা ভেঙে পরম আরাধ্য একটি উইকেটের জন্য একজন নয়, সাত টাইগার বোলার বোলিং করেছেন। আবু জায়েদ রাহী, তাসকিন, ইবাদত, তাইজুল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুমিনুল ও সাইফ একত্রে ৭৬ ওভার বা ৪৫৬টি বল করেছেন, রান দিয়েছেন ২৮৩টি। কিন্তু ভাঙতে পারেননি জুটি। পাল্লেকেলে টেস্টে প্রায় আড়াইদিন ব্যাটিং করে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ৫৪১ রান।

১৪৪ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে গোটা দিন ব্যাট করে উইকেট হারায়নি এমন রেকর্ড গতকালই প্রথম হয়নি। কারুণারত্নে-ধনাঞ্জয় জুটির ২৮৩ রানের রেকর্ডটি ছিল ২৫ নম্বর। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটা চতুর্থ। টাইগারদের বিপক্ষে প্রথম উইকেটশূন্য দিন পার করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে জ্যাক রুডলফ ও বোটা ডিপেনার টেস্টের দ্বিতীয় দিন পুরোটা সময় ৯০ ওভার ব্যাটিং করে ২৮০ রান যোগ করেন। প্রথমদিন রুডলফ ১৫ এবং ডিপেনার ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় দিন রুডলফ অপরাজিত থাকেন ১৭০ এবং ডিপেনার ১৩১ রানে। টেস্টটি বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ৭৭ রানে।

দ্বিতীয় রেকর্ড ২০০৭ সালে। মিরপুর স্টেডিয়ামে রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকার অবিচ্ছিন্ন থেকে ৩২৬ রান যোগ করেছিলেন। চার সেঞ্চুরিতে ভারতের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৬১০ রান এবং বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ২৩৯ রানে। ম্যাচটিতে দ্রাবিড় খেলেছিলেন ১২৯ রানের ইনিংস এবং টেন্ডুলকার অপরাজিত ছিলেন ১২২ রানে।

তৃতীয় রেকর্ডটি ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। প্রথমদিনই নেইল ম্যাকেঞ্জি ও  গ্রায়েম স্মিথ ৯০ ওভার ব্যাটিং করে গড়েন ৪০৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। প্রোটিয়া অধিনায়ক স্মিথ প্রথম দিনেই তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি। অপরাজিত থাকেন ২২৩ রানে। টাইগারদের এককালীন ব্যাটিং কোচ ম্যাকেঞ্জি অপরাজিত ছিলেন ১৬৯ রানে। পরে অবশ্য ম্যাকেঞ্জি ডাবল সেঞ্চুরি করেন, ২২৬ রানের। টেস্টটি হেরেছিল টাইগাররা ইনিংস ও ২০৫ রানে।

উইকেটশূন্য প্রথম তিন রেকর্ডের ম্যাচগুলো বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। এবারই ড্রয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। চতুর্থ রেকর্ডটি গতকাল পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে গড়েন দিমুথ কারুণারত্নে ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। তৃতীয় দিন শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ২২৯ রান। কারুনারত্নে অপরাজিত ছিলেন ৮৫ রানে এবং ধনাঞ্জয়া ২৬ রানে। গতকাল চতুর্থদিন দুজনে যোগ করেন ২৮৩ রান। কারুণারত্নে অপরাজিত থাকেন ২৩৪ রানে এবং ধনাঞ্জয়া ১৫৪ রানে। লঙ্কান অধিনায়ক ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংসটি খেলেন ৪১৯ বলে। কোনো ছক্কা না থাকলেও চার ছিল ২৫টি। ধনাঞ্জয়া ১৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেন ২৭৮ বলে ২০ চারে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ও তাসকিন। মিরাজ ৫২ ওভারে ১২৩ রান, তাসকিন ২৫ ওভারে ৯১ রান এবং তাইজুল ৩৯ ওভারে ১৩৬ রান দেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর