রবিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রতিবাদে কিংসের দৃষ্টান্ত

ফেডারেশন কাপ নিয়ে হযবরল বাফুফে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রতিবাদে কিংসের দৃষ্টান্ত

ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকান্ড নিয়ে অতীতে অসন্তোষ উঠেছে একাধিকবার। ঢাকা আবাহনী ও ঢাকা মোহামেডানের মতো বড় ক্লাব প্রতিবাদ জানিয়ে আসর বয়কট করার হুমকিও দিয়েছিল। তবে তা কখনো বাস্তবে দেখা মেলেনি। সিদ্ধান্ত বদল করে ঠিকই মাঠে নেমেছিল। স্বাধীনতার পর ঘরোয়া আসরে এই প্রথম ব্যতিক্রম ঘটল। ফিকশ্চার রদবদল, অনুপযোগী টার্ফ ও দলবদলে অনিয়মের প্রতিবাদে শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস ফেডারেশন কাপে মাঠে না নামার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্তে অটল আছে জনপ্রিয় ক্লাবটি। গতকাল ফেডারেশন কাপে কিংসের উদ্বোধনী ম্যাচ ছিল স্বাধীনতা সংঘের বিপক্ষে। সকাল থেকে গুঞ্জন ছিল কিংস সিদ্ধান্ত বদল করে মাঠে নামবে। কিন্তু তা হয়নি। স্বাধীনতা সংঘ মাঠে এলেও কিংসের দেখা মেলেনি। ম্যাচ কমিশনার আর আলম জানিয়েছেন কিংস মাঠে না আসার রিপোর্ট ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে দিয়েছি। এখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

ফেডারেশন কাপে টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। এবার তাদের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের সম্ভাবনা ছিল। এরপরও বাফুফের অন্যায় কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে টুর্নামেন্ট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেনি। শুধু বসুন্ধরা নয় মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তর বারিধারাও বয়কটের পথ বেছে নিয়েছে। গতকাল ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচ বয়কট করেছে বারিধারা। চট্টগ্রাম আবাহনী ও সাইফ স্পোর্টিং থেকে জানানো হয়েছে তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তাদেরও ফেডারেশন কাপে না খেলার সম্ভাবনা বেশি।

বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘অনিয়মের একটা মাত্রা আছে। সে জন্য কখনো কেউ প্রতিবাদ করেনি। এবার করতে বাধ্য হয়েছি। কমলাপুরের টার্ফ কি পেশাদার ফুটবলারদের জন্য উপযোগী? স্বাধীনতা কাপে শুধু আমাদের নয়, আরও ক্লাবের খেলোয়াড় ইনজুরির শিকার হয়েছেন। এটাতো শুধু ক্লাব নয় জাতীয় দলেও বিপর্যয় নেমে আসবে। সব দেখে বাফুফে কেন খেলোয়াড়দের মরণ ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছে সেটাই রহস্য! ফেডারেশন কাপে ফিকশ্চার হলো এক আর গভীর

রাতে পরিবর্তন। সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেছেন, তিনি নাকি জানতেন না। এটাও বলেছেন এতে কোনো সমস্যা দেখছেন না। বসুন্ধরা ও আবাহনীর মতো বড় দুই দল যেন ফাইনালে আগে মুখোমুখি না হয় সে কারণেই পরিবর্তন। এখানে সালাম ভাই দুই দলকে বিতর্কিত করলেন না?’

সালাম মুর্শেদী বলেছেন, ‘ফুটবল তো আর থেমে থাকতে পারে না। ফেডারেশন কাপ চলবে। স্থগিত করার সম্ভাবনা নেই। এনিয়ে আর কোনো বৈঠকও নয়। বসুন্ধরার সভাপতির সঙ্গে আমি নিজে কথা বলেছি। বুঝানো হয়েছে আপনারা বড় দল ও রানিং চ্যাম্পিয়ন, আপনাদের খেলা উচিত। ভুল তো হতেই পারে। পরে তো সংশোধনী ফিকশ্চার দেওয়া হয়েছে। তবু এলো না কিংস। শুনেছি আরও চারটি ক্লাব নাকি ফেডারেশন কাপ বয়কট করবে। করুক এটা নিজস্ব ব্যাপার। ফেডারেশন বাইলজ মেনেই সিদ্ধান্ত নেবে।’

চট্টগ্রাম আবাহনী ফুটবল টিমের সেক্রেটারি অভিজ্ঞ সংগঠক শাকিল মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাফুফে যেন অনিয়মের সমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এর প্রতিবাদ করা জরুরি ছিল। হয়তো টুর্নামেন্ট থেকে আমরাও নাম প্রত্যাহার করব। কমলাপুরের টার্ফকে অনেক আগেই অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও এখানে খেলা কেন, আমরা কোটি কোটি টাকা দিয়ে দল গড়ব। আর খেলোয়াড়রা ইনজুরির শিকার হবে। বাফুফে তো আমাদের অংশগ্রহণ মানি দিতে পারে না। সেখানে ইনজুরির পেছনে অর্থ ব্যয় করা স্বপ্নই বলা যায়। দেখেন গতবার রাকিব আমাদের দলে খেলেছে। পেশাদার ফুটবলে নিয়ম হচ্ছে অন্য দলে গেলে আগের দলের অনাপত্তি নিতে হয়। অথচ দলবদলের শেষের দিনে বাফুফে ঘোষণা দিল তা লাগবে না। বিশেষ করে একটি দলকে সুবিধা দিতে এ ব্যবস্থা। রাকিব স্বাধীনতা কাপে নতুন দলে খেলেছে তা ছিল অবৈধ্য। ফিফার কাছে পেশাদারিত্ব ভাঙা অভিযোগ আনলে কী অবস্থা হবে?’

 

সর্বশেষ খবর