বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

একাই লড়লেন মোসাদ্দেক

বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে করে ১২৭ রান

আসিফ ইকবাল

একাই লড়লেন মোসাদ্দেক

নাভীন-উল-হককে পঞ্চম ওভারে পর পর দুটি বাউন্ডারি মারেন সাকিব। তার ওই দুই চারে মনে হয়েছিল শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। টি-২০ ক্যারিয়ারে নিজের শততম টি-২০ ম্যাচটিকে স্মরণীয় করে রাখবেন সাকিব। কিন্তু সে রকম কিছুই হয় নি। বরং পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মুজিব-উর-রেহমানের ফ্লুটারে লাইন মিস করে বোল্ড হন সাকিব। ফলে ক্যারিয়ারের শততম টি-২০ ম্যাচে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। শুধু সাকিব নন, মুজিবের বোলিং বৈচিত্র্যে নাভিশ্বাস উঠেছিল দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয়ের। দুই ওপেনার সাজঘরে ফিরেন মুজিবের বলে। ৭ ওভারে উপরের সারির চার ব্যাটারের বিদায়ে স্পষ্ট হয়েছে, উইকেটের আচরণ ছিল ধীরগতির। থেমে আসা বলে উইকেটে স্ট্রোক ছিল খেলা ভীষণ কঠিন। আফগান দুই স্পিনার মুজিব ও রশিদের ঘূর্ণির বিপক্ষে একাই লড়াই করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সঙ্গী ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মাহমুদুল্লাহ ২৫ রান করেন। মোসাদ্দেক অপরাজিত থাকেন ৪৮ রানে। একাই লড়াই করেন তিনি। ৩১ বলের ইনিংসটিতে ৪টি চার ছাড়াও ছিল একটি ছক্কার মার। শেষ দিকে তার ব্যাটিং দৃঢ়তায়ই বাংলাদেশ লড়াকু স্কোর করে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বাংলাদেশের ১২৭ রানের জবাবে ১৩১ রান করে জয় তুলে আফগানরা।  

শারজাহতে এর আগে যে ২৫ ম্যাচ হয়েছে, তাতে প্রথম ব্যাট করা দলগুলো জিতেছে ১৬ বার। গতকাল একদম নতুন উইকেটে খেলা হয়েছে। আফগানিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী উইকেটের আচরণ নিয়ে বলেন, ‘নতুন মাটির উইকেট। উইকেটে বল নিচু হবে। এমন উইকেটে প্রতিপক্ষকে যত কম রানে বেঁধে রাখা যায়।’ ধীরগতির উইকেটে আফগানিস্তান খেলতে নামে দুই পেসার ও তিন স্পিনার নিয়ে। টাইগাররা একাদশ সাজায় তিন পেসার ও দুই জেনুইন স্পিনার নিয়ে। মূল স্পিনার সাকিব ছাড়া বাকিজন মেহেদি হাসান। অবশ্য দলের প্রয়োজনে মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আফিফ হোসেন বল ঘুরাতে পারেন। তিন পেসার-মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও সাইফুদ্দিন। অবশ্য দলে অলরাউন্ডারের সংখ্যাও অনেক। সাকিব উইকেট নিয়ে বলেন, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করা কঠিন।’       

শারজাহ একেবারে অপরিচিত নয় টাইগার ক্রিকেটারদের কাছে। ‘মরু শহর’ শারজাহতে বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলছে ১৯৯০ সাল থেকে। ৩২ বছর আগে অস্ট্রেলেশিয়া কাপ খেলেছিল টাইগাররা। সেবার নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর ১৯৯৫ সালে এশিয়া কাপে অংশ নিয়েছিল। ওই আসরে ৩ ম্যাচের সবগুলোই হেরেছিল টাইগাররা। ১৯৯৫ থেকে ২০২১; দীর্ঘ সময় শারজাহতে আর কখনই খেলেনি। ২০২১ সালে ফের খেলতে নামে শারজাহতে। টি-২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে দুটি ম্যাচ খেলেছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি হেরেছিল। বাজে ফিল্ডিং, ক্যাচ মিস কিংবা চার ছক্কা মারতে পারলেই জয়োৎসবে মেতে উঠতে পারত। কিন্তু হয়নি।

শারজাহ বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেট ভেন্যু। এই মাঠেই সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছে। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত এখানে ম্যাচ হয়েছে ২৪৪টি। যাতে টেস্ট মাত্র ৯টি এবং টি-২০ ২৫টি। বাকি সব ওয়ানডে। বাংলাদেশ আগের ৭ ম্যাচের সবগুলোই হেরেছে। ওয়ানডে খেলেছে ৫টি এবং টি-২০ ২টি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৭১ রান করেও হেরেছিল টাইগাররা। শারজাহতে এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বেশি রান চেজ। অবশ্য ম্যাচে দুটি সহজ ক্যাচ মিস করেছিলেন লিটন দাস। যার খেসারত গুনেছিল টাইগাররা। দলীয় স্কোর যখন ১২.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৯৮, ডিপ স্কয়ার লেগে ভানুকা রাজাপাকশের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন লিটন। বাউন্ডারি হয়েছিল বলটি। হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন রাজাপাকশে। আশালাঙ্কা জীবন পেয়ে ম্যাচ জেতান ৫ উইকেটে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর